ক্যাটাগরি

শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়তে

জৈবিকভাবে যে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে তা একবার দুর্বল হয়ে গেলে কোনো ওষুধেরই তা নিশ্চিতভাবে জোরদার
করার ক্ষমতা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের
অ্যাকাডেমি অফ নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়াটিকস’য়ের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত পুষ্টিবিদ ও মুখপাত্র
মেলিসা মজুমদার বলেন, “কোনো ‘সাপ্লিমেন্ট’ই নিশ্চিতভাবে করোনোভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা
দিতে পারবে না। যারাই এমনটা হয় বলে দাবি করছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে এফটিসি
(ফেডারেল ট্রেড কমিশন) এবং এফডিএ (ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)।”

খাবারের মাধ্যমে
কীভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার শক্তি বজায় রাখা যায় সে ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে
সিএনএন। তারই আলোকে জানানো হলো বিস্তারিত।

বেটা ক্যারোটিন: এই পুষ্টি উপাদানের উৎসের মধ্যে মিষ্টি
আলু, আম, পালংশাক, ব্রকলি, বাঙ্গি, গাজর, ‘কেইল’, ‘অ্যাপ্রিকট’ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বেটা ক্যারোটিন শরীরে গিয়ে ভিটামিন এ’তে রুপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতার জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয়। শরীরে আসা বিষাক্ত উপাদানের বিরুদ্ধে ‘অ্যান্টিবডি’কে
সক্রিয় করে তোলে এই ভিটামিন এ, জানান মজুমদার।

ভিটামিন সি: মজুমদার বলেন, “‘অ্যান্টিবডি’র রক্তে
মাত্রা বাড়ায় ভিটামিন সি এবং শ্বেতকণিকাকে পৃথক হতে সাহায্য করে। এতে শরীর বুঝতে পারে
কোন ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। শরীরে ভিটামিন সি’য়ের মাত্রা বেশি হলে তা সর্দিজ্বর
থেকে নিরাময়ে সাহায্য করে।”

কমলা, আঙুর,
কিউই, স্ট্রবেরি, লাল ও সবুজ মরিচ, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি ইত্যাদি থেকে সহজেই প্রতিদিন
২০০ গ্রাম ভিটামিন সি পেয়ে যেতে পারেন, যা শরীরের জন্য প্রতিদিনই প্রয়োজন।

ভিটামিন ডি: সংক্রামক জীবাণু, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া
চিহ্নিত করে ধ্বংস করে এমন এক প্রোটিনের নিয়ন্ত্রণ থাকে ভিটামিন ডি’র দখলে, জানান বস্টন
ইউনিভার্সিটির ভিটামিন ডি গবেষণা বিশেষজ্ঞ।

তিনি আরও বলেন,
“টি টু কিলার লিম্ফোসাইট’ নামক শ্বেত রক্তকণিকার কাজ ও সংখ্যা বদলাতে পারে এই পুষ্টি
উপাদান। যা ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ আটকে দেয়।”

সূর্যের আলোর
সংস্পর্শে আসার অভাবে ভিটামিন ডি’য়ের অভাব দেখা দিতে পারে, ফলে সকল সংক্রামক রোগের
আশঙ্কা বাড়বে। চর্বিযুক্ত মাছ, ডিম, পাস্তুরিত দুধ, পনির, মাশরুশ ইত্যাদি ভিটামিন ডি’য়ের
আদর্শ উৎস।

ভিটামিন ডি
সাপ্লিমেন্টও কাজে আসবে এর অভাব পূরণে। তবে তা করোনাভাইরাস থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিতে
পারবে না। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ভিটামিন ডি’য়ের মাত্রা জানা যায়।

দস্তা: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিকারী কোষের
বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ দস্তা। এর ‘সাপ্লিমেন্ট’ সাধারণ সর্দিজ্বরের সমস্যায়
কার্যকর হতে পারে। ভোজ্য উৎসের মধ্যে আছে শিম, মটরশুঁটি, মসুর ডাল, বাদাম, বীজজাতীয়
খাবার, যব, কাঁকড়া, চিংড়ি, গরুর মাংস, টকদই ইত্যাদি।

প্রোটিন: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিকারী কোষ
ও ‘অ্যান্টিবডি’ গঠনের মূল উপাদানই প্রোটিন। উদ্ভিজ্জ ও প্রাণিজ উভয় উৎস থেকেই প্রোটিন
মেলে। যেমন- মাছ, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, দুধ, টকদই, ডিম, পনির, বাদাম, ডাল, শিম ইত্যাদি।

প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিকস: ‘মাইক্রোবায়োম’য়ের সুস্বাস্থ্য বজার
রাখে এই দুটি উপাদান, যা পক্ষান্তরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। গাঁজানো
দুগ্ধজাত খাবার, আচার, শষ্যজাতীয় খাবার, পেঁয়াজ, রসুন, শিমের দানা ইত্যাদি থেকে এই
উপাদান দুটোই পেতে পারেন সহজেই।

সবশেষ বলতে
হয় পর্যাপ্ত পানি পানের কথা।

মজুমদার পরামর্শ
দেন, “প্রতিদিন পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩.৭ লিটার এবং নারীদের ক্ষেত্রে ২.৭ লিটার তরল গ্রহণ
করাতে হবে।”