ক্যাটাগরি

করোনাভাইরাস: চীনে বিদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

যাদের ভিসা কিংবা বসবাসের অনুমতি আছে তাদের ক্ষেত্রেও এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ডিসেম্বরের শেষদিকে হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এরই মধ্যে চীনে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমে এসেছে; চলতি সপ্তাহের তিনদিন মূল ভূখণ্ডের কোনো বাসিন্দার দেহে কভিড-১৯ এর উপস্থিতিও পাওয়া যায়নি বলে দেশটির সরকার জানিয়েছে।

চীনে এখন যে আক্রান্তদের পাওয়া যাচ্ছে, এদের বেশিরভাগই বিদেশফেরত কিংবা বিদেশি নাগরিক। বৃহস্পতিবার দেশটি মোট ৫৫ জন নতুন আক্রান্তের তথ্য দিয়েছে, যাদের ৫৪ জনই বিদেশ থেকে এসেছেন।

আগতদের মাধ্যমে ফের ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে এ শঙ্কায় দেশটি বিদেশিদের প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করল।   

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে শনিবার রাত ১২টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

এ নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি চীনা ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে চীনের ভেতর সপ্তাহে মাত্র একটি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়া হবে বলেও জানিয়েছে বেইজিং। সেসব ফ্লাইটের যাত্রীসংখ্যাও ধারণক্ষমতার ৭৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘সমগ্র বিশ্বে কভিড-১৯ এর ব্যাপক বিস্তৃতি’র কারণে চীনে ‘বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ স্থগিত’ করা হয়েছে।

যাদের ভিসা আছে, কিংবা বসবাসের অনুমতি আছে তারাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে; তবে কূটনীতিক এবং সি ভিসাধারীরা (মূলত এয়ারক্রাফটের ক্রুরা) এর বাইরে থাকবে।

অর্থনৈতিক, বাণিজ্য, বৈজ্ঞানিক বা প্রযুক্তিগত কিংবা জরুরি মানবিক প্রয়োজনে বিদেশি নাগরিকরা চীন দূতাবাস বা কনস্যৃলেটে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিষেধাজ্ঞার পরও বিশেষ এসব ভিসায় বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হবে না, বলেছে তারা।

রয়টার্স বলছে, চীন বিদেশি নাগরিক ও এয়ারলাইন্সের ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করলেও বেশিরভাগ এয়ারলাইন্স এর মধ্যেই দেশটিতে তাদের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে।

চীনের অনেক শহরেও আগে থেকেই ফ্লাইট অবতরণে নিষেধাজ্ঞা ছিল। গত মাসে বেইজিং তাদের শহরে প্রবেশ করা প্রত্যেককে বাধ্যতামূলক ১৪দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল।

চীনে আক্রান্ত-মৃত্যুর সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে এলেও করোনাভাইরাস এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল বিশেষ করে ইতালি ও স্পেনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

শুক্রবার পর্যন্ত চীনে মোট ৮১ হাজার ৩৪০ জনের শরীরে কভিড-১৯ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশন; এদের মধ্যে ৫৬৫ জন হয় বিদেশফেরত নয় বিদেশি নাগরিক।

যে হুবেই প্রদেশ থেকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি প্রথমে চীন ও পরে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সেখানে বৃহস্পতিবারও নতুন কোনো আক্রান্ত পাওয়া যায়নি বলে হেলথ কমিশন জানিয়েছে।

কভিড-১৯ এ আক্রান্ত নতুন রোগী না মিললেও হুবেইয়ের সবচেয়ে বিপর্যস্ত উহান শহরকে এখনও লকডাউন করে রাখা হয়েছে। ৮ এপ্রিল থেকে সেখানে বিধিনিষেধ শিথিল হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।