অত্যন্ত ছোঁয়াচে এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে বিশেষজ্ঞরা জনসমাগম
এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। ইতোমধ্যেই দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে
গেছে। গণপরিবহনও বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়া দোকানপাটও বন্ধ
রয়েছে।
এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে শুক্রবার বিভিন্ন জেলায় জুমার নামাজ শেষে মোনাজাত
করেন মুসলমানরা। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।
বেনাপোল
যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বাজারঘাট ও প্রধান সড়কগুলো জনশূন্য থাকলেও জুমার
নামাজে লোকজন উপস্থিতি হয়েছেন।
এলাকার বিভিন্ন মসজিদে নামাজ শেষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে
মোনাজাত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তবর্তী রুদ্রপুর জামে মসজিদের সদস্য আজিজুল
ইসলাম, বারোপোতা জামে মসজিদের সেক্রেটারি আব্দুল মোমিন, টেংরা মসজিদের ঈমাম হাবিবুর
রহমান, জামতলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফিজুর রহমান।
বাগআচড়া সাতমাইল জামে মসজিদে গিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্রবার
এখানে অনেক বেশি মানুষ নামাজ পড়েছেন।
জামতলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফিজুর রহমান বলেন, “বেলা ১২টায় মসজিদের
মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়, সুন্নত নামাজ বাসায় আদায় করে মসজিদে আসবেন। জুমার নামাজ শুরুর
ঠিক আগ মুহূর্তে মসজিদে ঢুকবেন। মুখে মাস্ক পরবেন। মসজিদে এসে ফাঁকা ফাঁকা হয়ে বসবেন।
কিন্তু অন্যান্য জুমার চেয়ে আজ প্রায় দ্বিগুণ মানুষ আসেন।”
তবে বেনাপোল জামে মসজিদে অন্যান্য দিনের চেয়ে কম মানুষ আসেন বলে ওই মসজিদে
নামাজ পড়তে যাওয়া লোকজন।
মৌলভীবাজার
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয় উপক্ষো করে মৌলভীবাজারের
বিভিন্ন মসজিদে ভিড় করে নামাজ পড়েছেন মুসলমানরা।
সরজমিনে দেখা গেছে,
কিছু মসজিদে কম লোক গেলেও বড় বড় মসজিদে ভিড় ছিল বেশি।
জেলার শ্রীমঙ্গল থানা জামে মসজিদে নামাজ পড়তে যান আবুজাহার বাবলা নামে
এক ব্যক্তি।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সবাই নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে নামাজ
আদায় করেছেন। মসজিদের ইমাম ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে মোনাজাত করেছেন।
“আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে আর করোনাভাইরাস থেকে সবার সুস্থতা কামনা
করতে ভয় উপক্ষো করে আল্লাহর ঘরে নামাজ পড়তে এসেছি।”
এই মসজিদে নামাজ পড়তে আসা শহরের কলেজ রোডের বাসিন্দা আয়াছ মিয়ার বলেন,
“ভাইরাস সংক্রমনের ভয় আছে। তবু এ থেকে রক্ষার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করার
জন্য এখানে নামাজ আদায় করতে এসেছি।”
শেরপুর
শেরপুর শহরের মাইসাহেবা জামে মসজিদে পরিচালনা
কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, অন্যদিনের চেয়ে আজ উপস্থিতি ছিল অনেক
কম। তিনতলা এই মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজে পাঁচ-ছয় হাজার মানুষ আসেন। আজ অনেক কম
ছিল
“যাদের সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট আছে এবং বৃদ্ধ, তাদের মসজিদে আসতে আগেই
নিষেধ করা হয় । করোনাভাইরাস সম্পর্কে সবাই সজাগ এবং সরকার ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে
দেওয়া নির্দেশাবলি মেনে চলা হচ্ছে।”
নামাজ শেষে মোনাজাতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মোনাজাত করা
হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিটির সহ-সভাপতি ইমাম হোসেন ঠান্ডুসহ অন্য অনেকে।
চুয়াডাঙ্গা
জেলা শহরের বড় বাজার জামে মসজিদ ও চুয়াডাঙ্গা থানা জামে মসজিদ ঘুরে দেখা
গেছে, অন্যান্য জুমার দিনের মতোই ভিড় ছিল।
এলাকার বিভিন্ন মসজিদে নামাজ শেষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে
মোনাজাত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বড় বাজার জামে মসজিদে নামাজ পড়া আইনজীবী শরীফ উদ্দিন
হাসু, চুয়াডাঙ্গা পুরাতন বাজারের বায়তুন নূর জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
চাঁদপুর
চাঁদপুরের বিভিন্ন মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজে অন্যান্য জুমার দিনের
মতই ভিড় দেখা গেছে। অনেককে মাস্ক পরে নামাজ পড়েছেন।
বিভিন্ন মসজিদে নামাজ শেষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মোনাজাত
করা হয়েছে বলে ইমামরা জানিয়েছেন।
ঝালকাঠি
ঝালকাঠির বিভিন্ন মসজিদে তুলনামূলক কম উপস্থিতি দেখা গেছে। জেলা শহরের
কেন্দ্রীয় ঈদগা মসজিদসহ শহরের সব মসজিদেই উপস্থিতি ছিল অনেক কম। এসব মসজিদে খুদবাসহ
নামাজের সময়ও সীমিত করা হয়েছে।
এসব মসজিদে নামাজ শেষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মোনাজাত
করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
নামাজ পড়তে আসা অনেক মসজিদ চত্বরের হকারদের কাছ থেকে মাস্ক কিনেছেন।
যশোর
যশোর শহরের
বিভিন্ন মসজিদে ভিড় করে জুমার নামাজ আদায় করেছেন মুসলমানরা।
শহরের ঘোপ, বেজপাড়া,
বারান্দিপাড়া, রেলস্টেশন এলাকার মসজিদগুলোয় লোকজন ভিড় করে নামাজ পড়েছেন।