ক্যাটাগরি

কর্মহীন দরিদ্র মানুষের জন্য এক চিলতে খুশি

খেটে খাওয়া মানুষদের কথা মাথায় রেখে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ দোকান খোলা হয়েছে জেলা শহরসহ আটটি উপজেলায়।

চলতি সঙ্কটকালে সাশ্রয়ী দামে প্রতিদিনের প্রয়োজনী চাল-ডাল এখানে পাওয়া যাবে।

জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান বলেন, অনেক মানুষ আছেন, যারা কারো কাছে হাত পাতা বা কারো সাহায্য নিতে পছন্দ করেন না। এ ধরনের মানুষসহ সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট কিছুটা কমোনোর জন্য আমরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সততা স্টোর চালু করেছি।

“এই সততা স্টোরে বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে কেনাকাটা করতে পারবে মানুষ।

চাল, ডাল, তেল, লবণসহ ১২টি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য এ দোকানে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

“আশা করি, দুর্যোগের পুরো সময়টাতেই আমরা এ সততা স্টোর চালু রাখব সাধারণ মানুষের জন্য।”

শুক্রবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ দোকানে ঝোলানো মূল্য-তালিকায় দেখা যায়, গুটি চাল ৩২ টাকা, পারিজা চাল ৩৫ টাকা, লবণ ১৫ টাকা, আলু ১৬ টাকা, রশুন ৬৫ টাকা, আদা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আটা দুই কেজির প্যাকেট ৬৫ টাকায় এবং এক বোতল সয়াবিন তেল ১০০ টাকায় মিলবে এখানে। এছাড়ও সরিষার তেল, চিনি, মশুর ডাল পাওয়া যাবে জেলা প্রশাসনের এ দোকানে।

বেঁধে দেওয়া তিন ফুটের সামাজিক দূরত্ব বজিয়ে রেখে নারী-পুরুষ ক্রেতারা নির্ধারিত বাক্সে টাকা রেখে তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনছেন। বাজার দামের চেয়ে কমে জিনিস কিনতে পেরে খুশি প্রান্তিক মানুষরা।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই সততা স্টোর।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত দুই দিন থেকে ঘর থেকে বের না হতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। গণযানবাহন ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। গত বুধবার থেকে চাঁদপুর জেলায় ওষুধ ও জরুরি পণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাস্তায় সাধারণ যানবাহান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচে এ স্টোরের ক্রেতা আবদুর রহমান, এতে করে আমাদের মত নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে।

“একে তো যানবাহন নেই, তার উপরে বাজারে জিনিসপত্রে দাম অনেক বেশি।”

পাশের ক্রেতা আবুল কাশেম যোগ করেন, “সেই তুলনায় প্রশাসনের দেওয়া এই সততা স্টোরে কম দামে আমাদের জিনিসপত্র কিনতে পারলাম। যা এই বিপদের সময় আমাদের জন্য আশীর্বাদ।”

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচের স্টোরটি থেকে দিনে তিন থেকে চারশ দরিদ্র মানুষ কেনাকাটা করেছে এবং বিভিন্ন উপজেলায় চালু করা সততা স্টোরগুলোতেও খেটে খাওয়া মানুষরা ভিড় করছে জিনিসপত্র কিনতে বলছে প্রশাসন।

জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধের ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান বলেন, আমরা পুরো চাঁদপুর জেলার খোঁজ-খবর রাখছি।

“হোম কোয়ারেন্টিন যেন সঠিকভাবে পালন করে সেজন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবে নজরদারি অব্যাহত রেখেছি।

শুক্রবার পর্যন্ত এ জেলার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের কোনো খবর পায়নি প্রশাসন।