তিন দিন ধরে অপেক্ষায় থাকার পরেও আইইডিসিআর কর্মীরা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ২৫ মার্চ এক ফেইসবুক পোস্টে আর চিকিৎসা না করানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন এই নারী।
এরপর ওই দিনই তার নমুনা সংগ্রহ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআর, সেই পরীক্ষার প্রতিবেদন শনিবারই হাতে পেয়েছেন আতিকা রোমা।
বিকালে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কিছুক্ষণ আগে প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। করোনাভাইরাসের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আপাতত শরীর ও মন ভালো আছে।”
পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরেও ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন আতিকা রোমা।
তিনি লিখেছেন, “অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা ও আশির্বাদে এ জীবনে আর একবার নতুন জীবন পেলাম। সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আমি শুধু এটুকুই চেয়েছিলাম, একটা সঠিক ডায়াগনোসিস হোক। সঠিক রোগ নির্ণয়। তা করতে গিয়ে দেখলাম চারদিকে খালি অব্যবস্থাপনা। সেটুকুরই প্রতিবাদ করেছিলাম একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে।”
২৫ মার্চের ওই পোস্টে আতিকা অভিযোগ করেন, গত ১২ মার্চ থেকে তিনি কাশি, জ্বর এবং সর্বশেষ শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। এই সময়ের মধ্যে বিদেশি নাগরিকদের সংস্পর্শে এসেছিলেন এবং ঢাকা বিমানবন্দরে ঘোরাফেরা করেছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কা নিয়ে কয়েক দিন আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর ২৩ মার্চ তারা সময় দেয়। নির্ধারিত সময়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করতে তারা আসেননি। করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় নির্ধারিত হাসপাতালে গিয়েও চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।
তার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, রোগীর লক্ষণ-উপসর্গ দেখে পরিস্থিতি বিবেচনায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রোগ নির্ণয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তারা।
‘পরীক্ষার জন্য তিন দিন ধরে অপেক্ষায় রেখেছে আইইডিসিআর’
“আবার অনেক সময় কারও বাসায় গিয়ে পরীক্ষার ক্ষেত্রে চিকিৎসাকর্মীরা হয়ত বাসার ঠিকানা খুঁজে পান না। সেক্ষেত্রে একটু দেরি হতে পারে।”
তবে আতিকার ক্ষেত্রে কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি মীরজাদি ফ্লোরা।
“আমাদের এখানে প্রতিদিনই হাজার হাজার কল আসে। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব হয় নয়।”
আগের ফেইসবুক পোস্টে আইইডিসিআরের পরিচালক হিসাবে মীরজাদি ফ্লোরাকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন আতিকা রোমা, সেজন্য এখন দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি।
রোগ নির্ণয়ের প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় তাকে সামাজিক বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়েছিল জানিয়ে আতিকা লিখেছেন, “এখন বলি আমার চারপাশে কী কী ঘটেছে। থানা থেকে পুলিশ পাঠিয়ে বিল্ডিং লকডাউন করে একটা হুলস্থূল করা হয়েছিল। বিল্ডিং-এর মানুষজনের স্বাভাবিক চলাফেরায় প্রতিবন্ধকতা তৈরির ফলে বেশিরভাগই বিরক্ত ছিল।
“আমাদের বিল্ডিং থেকে নাকি বাসার কাছের মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে মানা করা হয়েছিল বাসিন্দাদের। আজই তা জানলাম।
“এছাড়া সেক্টর কল্যাণ সমিতির ময়লার গাড়ি নাকি আর সব বাসার বর্জ্য নিলেও গত দুই দিন আমাদের বাড়িরটা নেয়নি।”