শনিবার দুপুরে তেজগাঁওয়ের শান্তা টাওয়ারের পাশে আকিজের জমিতে নির্মাণাধীন ওই প্রকল্পে এলাকাবাসীর হামলায় নিরাপত্তাকর্মী ও নির্মাণ শ্রমিকসহ তিনজন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ বশির উদ্দিন জানিয়েছিলেন, আগামী ৭/৮ দিনের মধ্যে তিনশ শয্যার ওই হাসপাতাল প্রস্তুত করতে তাদের ইঞ্জিনিয়ার ও আর্কিটেক্টরা কাজ শুরু করেছেন। হাসপাতালে আইসিইউসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে। চিকিৎসা দেওয়া হবে বিনামূল্যে।
কিন্তু হাসপাতাল হলে ওই এলাকার বাসিন্দারা করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে পড়বেন- এমন আশঙ্কায় শনিবার দুপুরে দুই শতাধিক লোক আকিজের ওই স্থাপনায় গিয়ে নিরাপত্তাকর্মী ও নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর হামলা করে এবং বলাকা মোড়ে বিক্ষোভ দেখায়।
রহিমা বেগম নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, “এই এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে হাসপাতাল হলে এলাকাবাসীও সংক্রমিত হতে পারে। তাই দূরে কোথাও এই হাসপাতাল নির্মাণ করা হোক।”
প্রায় দেড় ঘণ্টা বিক্ষোভের পর স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুলিশ এসে ‘হাসপাতাল হবে না এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে’ এমন আশ্বাস দিলে এলাকাবাসী চলে যায়।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি আলী হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোয়ারেন্টিন সেন্টারও হওয়ার কথা ছিল। প্রাথমিক অবকাঠামো শুরুও হয়েছিল। কিন্তু এই এলাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। তাই এলাকাবাসী সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে বিক্ষোভ করেছে।
“প্রাথমিকভাবে বুঝিয়ে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর এসেছেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। দেখা যাক পরে কী হয়।”
চলতি বছরের শুরুতে চীনের উহান শহরে প্রথম ধরা পড়া অতি ছোঁয়াছে নভেল করোনাভাইরাস ইতোমধ্যেই বিশ্বের বড় বড় শহরগুলোকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
উহান শহরেই দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্প্রসারণের অংশ হিসাবে মাত্র ছয় দিনে এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ করে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল চীন। সেই ধারণা থেকেই ঢাকায় দ্রুত একটি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনার কথা বলেছিল আকিজ।
বিক্ষোভ-হামলার পর প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকবে কি না জানতে চাইলে আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এখনও কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিইনি। তেমন কিছু হলে আপনাদের জানানো হবে।”
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান মেলে। মাত্র ২১ দিনের মাথায় বাংলাদেশে ৪৮ জনের মধ্যে সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে আইইডিসিআর। মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের।