সবশেষ গত ১২ মার্চ নির্ধারিত তারিখেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুল হক প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি।
ফলে ঢাকার মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী আবারও তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল পরবর্তী দিন রেখেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল হক দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেবেন বললেও নির্দিষ্ট করে দিন-তারিখের ধারণা দিতে পারেননি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দ্রুতই প্রতিবেদন জমা দেব। ঘটনাস্থলের মানচিত্র, সূচিপত্র তৈরির পর রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসাবে কয়েকজনের ১৬১ ধারায় জবানবন্দী নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাক্ষীদের সংখ্যা নথিপত্র দেখা ছাড়া বলতে পারব না।”
কবে নাগাদ প্রতিবেদন দাখিল করা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ঠিক করে বলতে পারছি না, তবে কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব, তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করব।”
মামলার অন্যতম আসামি তাসভীর উল ইসলামের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, “আমার মক্কেল আগুনের ঘটনার এ মামলা ছাড়া অন্য মামলাতেও (নকশা জালিয়াতি) জামিনে রয়েছেন। তিনি আদালতের আদেশ মেনে চলছেন। তাছাড়া আগুনের মামলায় অন্য দুই আসামিও জামিনে রয়েছেন।”
গত ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের পাশের ১৭১ নম্বর সড়কে ফারুক রূপায়ন (এফআর) টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাস্থলেই ২৫ জন এবং হাসপাতালে একজন মারা যান।
ওই ঘটনায় আহত হন আরও ৭৩ জন। এছাড়া আহত ফায়ারম্যান সোহেল রানাও মারা যান। এই ঘটনায় ওই বছরের ৩০ মার্চ বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিল্টন দত্ত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ওই ভবনের ১৯ থেকে ২৩ তলা পর্যন্ত বর্ধিত অংশের মালিক তাসভীর উল ইসলাম, ভবনের জমির মালিক প্রকৌশলী এসএমএইচআই ফারুক ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান ওরফে মুকুলকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের দিনই বারিধারার বাসা থেকে তাসভীরকে ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন প্রত্যেক আসামির সাত দন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
গ্রেপ্তারের ১১ দিনের মাথায় গত বছরের ১১ এপ্রিল জামিন পান তাসভীর। আর একমাস পাঁচদিন কারাভোগের পর গত বছরের ৬ মে জামিন পান ফারুক। রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান ওরফে মুকুল গত বছর ২৩ জুন আত্মসমর্পণ করে জামিন পান।
অন্যদিকে এফআর টাওয়ারের নকশা অনুমোদনে এসএমএইচআই ফারুক হোসেন, লিয়াকত আলী খান মুকুল, তাসভীর উল ইসলাম এবং রাজউকের সংশ্লিষ্ট ইমারত পরিদর্শকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পরে নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধভাবে ১৬ থেকে ২৩ তলা ভবন নির্মাণের অভিযোগে এফআর টাওয়ারের মালিক, রাজউকের সাবেক দুই চেয়ারম্যান এবং রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৫ জুন দুটি মামলা করে দুদক।
এরপর গত ২৯ অক্টোবর ফারুক, লিয়াকত আলী খান মুকুল, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ূন খাদেম, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান ও সাবেক অথোরাইজড অফিসার সৈয়দ মকবুল আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা।