বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) করোনা রোগী শনাক্তকরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম শিগগিরই শুরু করা, করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক-নার্সদের প্রশিক্ষণসহ তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থাসহ নানা বিষয়ে আজ (২৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে এক গুরুত্বপূর্ণ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। সভায় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট সম্মানিত ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, অধ্যাপক, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, পরিচালকরা (হাসপাতাল) অংশ নেন।
সভায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করা, রোগীদের সেবা প্রদান, প্রশিক্ষণ দান, হেল্প লাইন চালু, করোনা রোগী ছাড়া অন্য রোগীদের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে চিকিৎসক সমাজ ও চিকিৎসা পেশার সাথে সংশ্লিষ্টরা বর্তমানে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি। সবকিছু উপেক্ষা করে জীবনকে বাজি রেখে চিকিৎসক সমাজ হীরোর মতো করোনা যুদ্ধকে মোকাবিলা করবে- এটাই আমার অনুরোধ। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ও যথাযথ ভূমিকা পালন করলে এই সঙ্কট অবশ্যই কাটিয়ে উঠতে পারবো। ‘
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের ছুটি নেই। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা যুদ্ধে নেমেছি। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে চলমান এই যুদ্ধে চিকিৎসক সমাজ অবশ্যই জয়ী হবে বলে আমার বিশ্বাস। ‘
ওরাল হেলথ ফাউন্ডেশন, বিসিএস বার ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পিপিই, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ:
আজ (শনিবার) ওরাল হেলথ হ্যান্ড ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল সার্জন এবং ডেন্টাল আউটডোরে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, পারসোনাল প্রোটেশকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বিতরণ করা হয়।
এ উপলক্ষে এ ব্লকের চারতলায় আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। ওরাল হেলথ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কনজারভেটিভ ডেনটিসট্রি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়লের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. গাজী শামীম হাসান, ওরাল হেলথ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আশীষ কুমার বণিক, কোষাধ্যক্ষ ডা. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, করোনা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন। করোনা মোকাবিলায় সচেতন হওয়ার সাথে সাথে রোগীদের শনাক্তকরণের জন্য করোনা পরীক্ষাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। চট্টগ্রামে করোনা রোগী শনাক্তকরণের জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরাতন ৮টি মেডিকেল কলেজেও করোনাভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা মোকাবিলা একটি যুদ্ধ। সবকিছু উপেক্ষা করে চিকিৎসক সমাজ এই যুদ্ধে হীরোর মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে- এটাই আমার বিশ্বাস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিগগিরই করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে আজ শনিবার অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার কাছে তার কার্যালয়ে বিসিএস বার ক্যাডারের চার কর্মকর্তা মুসফিকুর রহমান, নার্গিস আক্তার কলি, পল্লব কুমার দে, দিপঙ্কর চন্দ্র সরকার, হ্যান্ড গ্লোভস, চশমা, হেড কভার, স্যু কভার, পারসোনাল প্রোটেকটিভ গাউনসহ ১০০ পিস পিপিই হস্তান্তর করেন।
এসময় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অনেকালজি বিভাগের শিক্ষক ও অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ডা. জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ডেজিগনেটেড রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (ডিআরআইসিএম), বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)-এর পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের জন্য হ্যান্ডরাব বি ক্লিন দুটি গ্যালন (১০ লিটার) প্রদান করেছে।
এমইউ/এনএফ/জেআইএম