ক্যাটাগরি

সড়কে ‘সিনক্রিয়েট’ নয়, হোটেল-বেকারি খুলতে দেয়ার নির্দেশ

হোটেল ও বেকারিগুলো খুলতে দিতে হবে। সেইসঙ্গে সেখানে কর্মরতদের অবাধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে দিতে হবেসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ১০টি নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

শনিবার সকালে ডিএমপির উপ-কমিশনার (ডিসি), অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি), সহকারী কমিশনার (এসি) এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) এই বার্তা দেন তিনি।

বার্তার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকায় একজন নাগরিক যেকোনো মাধ্যম ব্যবহার করে চলাফেরা করতে পারবেন।’

‘আমরা প্রথমদিন থেকেই পুলিশকে জনগণের সঙ্গে সদয় আচরণ করার নির্দেশনা দিয়েছি। তবে অনেকেই ভারতের ছবি-ভিডিওগুলো দেখে নেগ্লেন্সি সিচুয়েশন তৈরি করার চেষ্টা করেছে। আমরা পুলিশকে বলেছি, এই অবস্থায় কারও বাইরে বের হওয়ার কথা না। তবে কেউ যেহেতু বাইরে বের হয়েছে নিশ্চয়ই তার কোনো প্রয়োজন রয়েছে। এই প্রয়োজনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে পারবে পুলিশ। তবে কারও বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের প্রমাণ পেলে আমরা তাকে সাসপেন্ড করব।’

কমিশনারের ১০টি নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, অনেকের রান্না-বান্নার ব্যবস্থা নেই, তাদের জন্য খাবার হোটেল, বেকারি খোলা রাখতে দিতে হবে। এগুলোতে কর্মরত কর্মচারীদের সড়কে চলাচল করতে দিতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য পণ্যের দোকান খোলা রাখতে দিতে হবে, এসব দোকানে কর্মরতদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে দিতে হবে।

বার্তায় তিনি আরও বলেন, খাবার হোটেল থেকে গ্রাহকদের খাবার পার্সেল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিতে হবে। তবে কেউ যদি হোটেলে খেতে চায় তাকে অন্যের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে বসতে দেয়া যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকায় যে কোনো নাগরিক যেকোনো মাধ্যম ব্যবহার করে চলাফেরা করতে পারবেন। চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা, নিরাপত্তাকর্মী, মেডিকেল স্টাফদের সহযোগিতা করতে হবে।

১০টির মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ৩টি নির্দেশনা রয়েছে। তা হলো- যেকোনো ক্ষেত্রে নাগরিকদের সঙ্গে পেশাদার আচরণ করতে হবে। দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যদেরও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ ছাড়া পুলিশের এমন কোনো ঘটনা তৈরি (সিনক্রিয়েট) করা যাবে না যাতে পুলিশের ভাবমূর্তি ও ভালো কাজগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যায়।

ঢাকার কয়েকজন ডিসি, এডিসি এবং এসি সমমর্যাদার কর্মকর্তারা জাগো নিউজকে বার্তা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির একজন এসি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে এই বার্তাগুলো অধস্তন কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন।’

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বাড়তে থাকায় বৃহস্পতিবার থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য রাস্তায় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী কাজ করছে। বুধবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাস্ক না পরা বা বাইরে বের হওয়ার জন্য পুলিশের লাঠিপেটা, কান ধরে উঠবস করানোর দৃশ্য চোখে পড়েছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের এ ধরনের আচরণ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় রিকশা থামিয়ে জিজ্ঞাবাদ করতে দেখা যায় পুলিশকে। সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশনা দিলেও শুক্রবার পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে এ ধরনের অনেক দোকানই পুলিশ খুলতে দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশকে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে শুক্রবার বার্তা দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। বার্তায় তিনি বলেন, ‘জনজীবন সচল রাখতে চিকিৎসা, ওষুধ, নিত্যপণ্য, খাদ্যদ্রব্য, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং ও মোবাইল ফোনসহ আবশ্যক সব জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও যানবাহনের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করুন। দায়িত্ব পালনকালে সাধারণ জনগণের সঙ্গে বিনয়ী, সহিষ্ণু ও পেশাদার আচরণ বজায় রাখুন।’

এআর/জেইউ/এমকেএইচ