শনিবার সকালে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দাড়িদহ গ্রামের এক ভাড়াবাসায় মারা
যান কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের মুরইল দক্ষিণপাড়ার এ বাসিন্দা।
তার মৃত্যুর পর ওই বাড়িটিসহ ১০টি বাড়ি লক-ডাউন করেও দেয় প্রশাসন।
ঢাকার এ ব্যবসায়ীর মৃত্যুর কারণ করোনাভাইরাস বলে সন্দেহ হওয়ায় তার নাক
থেকে নমুনা নিয়ে ঢাকায় পাঠাতে বলেছিলেন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মীরজাদি
সেব্রিনা ফ্লোরা।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস
সংক্রান্ত যাবতীয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করছে।
আইইডিসিআর পিপিই দিয়ে লাশ আবৃত করে দাফনের পরামর্শও দেয় সকালেই তাও জানিয়েছিলেন
বগুড়া জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন।
তারই কবর দিতে গিয়ে অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার
কুদরত এ খুদা তার এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে।
কুদরত এ খুদা লেখেন, “একটি লাশ দাফন করে এভাবে স্ট্যাটাস দিয়ে জানাতে হবে
তা কখনো ভাবি নি!!!
“মানুষের মাঝে মানবিকতা জাগাতে এতটা গলদঘর্ম হতে হবে, তা কখনো জানা ছিল
না।
“সকাল থেকেই নানা বাধা-বিপত্তি আর নানা নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে আজ রাত পৌনে
৮টার সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ সাপেক্ষে
পুলিশের উদ্যোগেই লাশের দাফন সম্পন্ন করা হলো!!”
তিনি আরো লেখেন, “দাফন কাজে বাধা দেওয়ার খবর শোনা মাত্রই এলাকার আইন-শৃংখলা
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য অতিরিক্ত দুই প্লাটুন স্পেশাল আর্মড ফোর্স প্রেরণ করা
হয়।
“কয়েকজন দুষ্ট লোক এলাকায় ভুল বুঝিয়ে কয়েক হাজার লোক জড়ো করেন!! শিবগঞ্জ
থানার ওসি মিজানুর রহমান মানুষকে বুঝিয়ে ঘরে
ফেরান।”
এরপর দাফনে আরো বিপত্তির কথা লেখেন এরপর।
“কিন্তু কবর খোড়ার লোক কোথায়??? শিবগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোস্তাফিজ
আর এসআই আহসান আরো দুইজনকে সাথে নিয়ে শুরু করেন কবর খুড়তে!! অবশেষে লাশ দাফন হলো!!
“একজন ব্যক্তি পেল তার মৃতদেহের সঠিক মর্যাদা। আমরা দূর থেকে দাঁড়িয়ে দোয়া
পড়লাম।”
বগুড়ায় শ্বাসকষ্ট নিয়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু, ১০টি বাড়ি লক-ডাউন
দাফনের পর নিহতের ব্যক্তির স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, জানাজার সময় আমাদের
কাউকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি।”
সরকারি হিসেবে দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু
হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন; যাদের মধ্যে ১৫ জন সুস্থ হয়ে গেছেন।