কভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের
সব ধরনের খেলাধুলা আপাতত স্থগিত রেখেছে ইংল্যান্ড। তবুও থামানো যাচ্ছে না ভাইরাসের
বিস্তার। দুর্যোগের এই সময়ে না ভড়কে সাহসের সঙ্গে পরস্পরের সাহায্যে এগিয়ে আসতে বলেছেন
রুট। ইসিবির মাধ্যমে সোমবার একটি খোলা চিঠি লিখেছেন ইংলিশ অধিনায়ক।
ব্রিটিশ নাগরিক,
আজ আমি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয়
টেস্টে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিতাম।
আজ আমার ইয়র্কশায়ার সতীর্থ ও সহকর্মীরা
কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগে তাদের প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্যায়ে
থাকত।
আজ যুক্তরাজ্য জুড়ে ক্রিকেট ভক্তরা
তাদের ক্লাবের প্রচারণার জন্য নেটে ঢুকতে নিশপিশ করত, ম্যাচ জেতার মুহূর্তের স্বপ্ন
দেখত কিংবা কেবল সতীর্থদের সঙ্গে খেলত অথবা আমরা যে খেলাটা পছন্দ করি স্থানীয় মাঠে
সেটা দেখত।
কিন্তু আজ এটা পুরোপুরি ভিন্ন। আমরা
জানি, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব জীবন ও ক্রিকেটকে থমকে দিয়েছে, আমাদের দৃষ্টিকোণকে
তীক্ষ্ণ করছে ও প্রকৃত নায়কদের প্রদীপের আলোয় আনছে।
ইংল্যান্ডের একজন ক্রিকেটার হিসেবে
আমি কিছু মরিয়া দিনের স্বাদ পেয়েছি ও সর্বোচ্চ উল্লাস উপভোগ করেছি ও চেষ্টা করেছি মাটিতে
থাকার। কিন্তু আমি নিশ্চিত যে গত কয়েক সপ্তাহে আমার মত আপনারা অনেকেই তীব্র আবেগ অনুভব
করেছেন, যা মহামারী ছড়ানোর আগে কখনও অনুভব হয়নি।
সম্ভবত আপনি ভালোবাসার কাউকে হারিয়েছেন,
অসুস্থ কাউকে নিয়ে অথবা নিজের অসুস্থতা নিয়ে ভয়ে আছেন। সম্ভবত আপনি পরিবার ও বন্ধুবান্ধব
নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন ও ভবিষ্যতে কি আছে, এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
টিমওয়ার্ক আমাদের সমাজে এর আগে কখনও
এতো গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। সামাজিক দূরত্ব মানে এটা হতে পারে আমরা একত্রে শারীরিক সংস্পর্শে
আসতে পারব না, কিন্তু আমাদের শক্তি নিহিত সম্প্রদায়ের মধ্যে একত্রে একে অপরকে সাহায্য
করার মধ্যে।
মানুষ করেছে এমন অনেক অবিশ্বাস্য গল্প
আমি শুনেছি, আমার অঞ্চলে, দূরের কাউন্টিতে ও দেশ পেরিয়ে, যা আমার মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
গত গ্রীষ্মের বিশ্বকাপ জয় একটি বিশেষ
মুহূর্ত ছিল, যা আমার মধ্যে সারা জীবন বেঁচে থাকবে। এই মহামারী আমাদের দেখিয়েছে, সবচেয়ে
বড় অভিনন্দন কাদের প্রাপ্য।
যারা এই প্রয়োজনে সামনের সারিতে থেকে
কাজ করছেন, যারা জীবনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সমন্বয় ও বিতরণ করছেন এবং যারা এখন পর্যন্ত
অঘোষিত নায়ক, তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে স্যালুট।
আমার সতীর্থরা ও আমি অসম্ভব ভাগ্যবান
যে অসাধারণ সমর্থন পেয়েছি কয়েক বছরে। শুধুমাত্র যেসব মাঠে খেলেছি সেখানকার দর্শকদের
কাছ থেকে নয়, সারা বিশ্ব থেকে যারা আমাদের অনুসরণ করছেন। এটা সত্যিই পার্থক্য তৈরি
করেছে।
ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড।