ক্যাটাগরি

চট্টগ্রামে অধিকাংশ পরিচ্ছন্নতাকর্মীরই নেই সুরক্ষা উপকরণ

পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কেউ কেউ মাস্ক ব্যবহার করলেও সিংহভাগেরই নেই গ্লাভস; আর গামবুট ব্যবহারের হার প্রায় শূন্যের কোঠায়।

তারা বলছেন, সিটি করপোরেশন থেকে তাদের কোনো সুরক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়নি।

তবে সিটি করপোরেশনের দাবি, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মাস্ক ও জুতা দেওয়া হলেও সেসব ব্যবহারে তাদের অনীহা আছে। আর গ্লাভস দেওয়া হবে চলতি সপ্তাহের মধ্যে।

৭০ লাখ মানুষের এই নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সিসিসির প্রায় তিন হাজার ৭০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন। এদের মধ্যে এক হাজার ৭০০ জন স্থায়ী। আর দৈনিকভিত্তিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রায় দুই হাজার। এরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভ্যান গাড়িতে করে আবর্জনা সংগ্রহ করেন।

সোমবার দুপুরে নগরীর বাগমনিরাম এলাকায় ভ্যান গাড়ি নিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করছিলেন মিঠুন দাশ। তার হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক কিছুই ছিল না।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাস্ক দিবে বলছিল। এখনও পাই নাই। আর কখন দিবে?”

নগরীর জামালখান এলাকায় হাতে গ্লাভস আর মুখে মাস্ক পড়ে সড়ক ঝাড়ু দিচ্ছিলেন মো. আজিজ।

তিনি বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর একটা মাস্ক দিয়েছিলেন, গ্লাভস নিজেই কিনে নিয়েছেন।

কাজীর দেউড়ি মোড়ে একজন নারী ও একজন পুরুষ পরিচ্ছন্নতাকর্মী রিকশা ভ্যান থেকে আবর্জনা সিসিসির ট্রাকে তুলছিলেন।পুরুষ কর্মীর মুখে মাস্ক থাকলেও হাতে গ্লাভস ছিল না, পায়ে ছিল না জুতা। আর নারী কর্মীর পরনে মাস্ক, গ্লাভস কিছুই ছিল না।

নগরীর এনায়েত বাজার এলাকায় একজন কর্মীতে হাতে পলিথিন মুড়িয়ে আবর্জনা  অপসারণ করতে দেখা গেছে।

দেওয়ানবাজার এলাকায় রিকশা ভ্যানে আবর্জনা নিয়ে যাচ্ছিলেন মো. সোহেল।

তিনি বলেন, “বলেছিল মাস্ক-গ্লাভস দিবে। এখনও দেয় নাই। কী করব, কাজ তো করতে হবে। তাই এভাবেই কাজ করতেছি।”

পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমান বলেন, সিটি করপোরেশনের উচিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দুই সেট করে মাস্ক ও সাবান দেওয়া। প্রত্যেকবার কাজ শেষ করে এবং মাস্ক পরা ও খোলার আগে-পরে যেন সাবান দিয়ে তারা হাত ধুতে পারেন।

“প্রত্যেকবার কাজের শেষে তারা যাতে পরনের কাপড় সাবান পানিতে বেশি সময় ধরে ডুবিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলেন এবং জুতাগুলো ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে।”

ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, এসব বিষয়ে সিটি করপোরেশনের উচিত প্রয়োজনে চিকিৎসকদের দিয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বোঝানো, তারা যেন কাজের সময় মুখে হাত না দেন এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সিসিসির পরিচ্ছন্নতা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের সঙ্গে।

তিনি বলেন, “পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মাস্ক এবং গামবুট আছে। কিন্তু তাদের একটি প্রবণতা হলো এগুলো ব্যবহার না করা। এটা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে।

“আমরা চার হাজার গ্লাভস অর্ডার দিয়েছি। বুধ বা বৃহস্পতিবারের মধ্যে সেগুলো দিয়ে দিতে পারব।”

নিজের ওয়ার্ডসহ আশপাশের কয়েকটি ওয়ার্ডে নিজের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ করছেন বলেও জানান কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন।