বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার হামেরদী ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামে এ হামলায় ছয়জন আহত হন; তারমধ্যে দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভাঙ্গা থানার ওসি শফিকুর রহমান বলেন, “হামলার খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দুই পক্ষের দুইটি মারামারির মামলা চলমান থাকার কথা জানিয়ে ওসি বলেন, “গতকাল দুই পক্ষের দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের ওই দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজুল স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবর রহমান ওরফে নিক্সনকে সমর্থন করেন। বঙ্গবন্ধুর বোন ফাতেমা বেগমের নাতি নিক্সন। অপরদিকে ইলিয়াস সমর্থন করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফরউল্লাহকে।
ফরিদপুর-৪: যেখানে সিংহের কাছে কাবু নৌকা
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভোর ৪টার দিকে ‘সিরাজ তালুকদারের আনুমানিক দেড় শতাধিক সমর্থক’ ইলিয়াসের সকর্থকদের বাড়িঘরে অতর্কিতে হামলা করে। এতে ১৫টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
আহত ছয় জনের মধ্যে শহীদুল্লাহ (৫২) ও সোহেল সিকদারকে (২৮) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তারা।
যাদের ঘর-বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে তারা হলেন, শাহীন ব্যাপারী, ইসমত আকন, আব্দুল হক আকন, মুশা আকন, বক্কার আকন, এলাহি মিয়া, সাহেদ মিয়া, রশিদ মিয়া, শাহ আলম, শফিকুল ইসলাম, ইদ্রিস মিয়া, শুকুর সিকদার, আকবর সিকদার, আবু মোল্লা ও রিপন মোল্লা।
হামেরদী ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম বলেন, “সিরাজ তালুকদার পুলিশ সদস্য। অবসরে আসার পর তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি একের পর এক অন্যায় করে যাচ্ছেন।
“সিরাজের বাড়ি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক সংলগ্ন মাধরপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে। গ্রামবাসীকে তার বাড়ির পাশ দিয়ে যাতায়ত করতে হয়। এ কারণে তিনি এলাকাবাসীকে সহজেই নাজেহাল করতে পারেন।”
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক পুলিশ সদস্য সিরাজুল তালুকদার বলেন, “আমি এলাকায় নেই।
“এলাকা থেকে জানতে পেরেছি-গত বুধবার দুপুরে আমরা যারা নিক্সনের সমর্থক তাদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর করেছে প্রতিপক্ষ। এর প্রতিক্রিয়ায় নিক্সনের সমর্থকরা পাল্টা তাদের বাড়িঘরে হামলা করে ভাঙচুর করেছে।”
এলাকাবাসী জানায়, মাধবপুর গ্রামের অধিপত্য নিয়ে সাবেক পুলিশ সদস্য সিরাজুল তালুকদারের সাথে ওই গ্রামের ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইলিয়াস মিয়ার বিরোধ চলে আসছে।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজুল স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবর রহমান ওরফে নিক্সনকে সমর্থন করেন। অপরদিকে ইলিয়াস সমর্থন করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফরউল্লাহকে।
ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবর বিজয়ী হলেও মাধবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেশি ভোট পান কাজী জাফরউল্লাহ।
ওই নির্বাচনের পর থেকে এ দুইজনের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। গত এক বছরে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে অন্তত সাতবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গত ২৪ মার্চ সংঘর্ষে আহত হন ইলিয়াসের দুই সমর্থক আকরামুজ্জামান (৫২) ও কাজল মিয়া (৩১)। আকারামুজ্জামান ঢাকায় চিকিৎসা নেন এবং কাজল মিয়াকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।