‘কোরিলেশন
বিটুইন ইউনিভার্সাল বিসিজি ভ্যাকসিনেশন পলিসি অ্যান্ড রিডুউসড মরবিডিটি অ্যান্ড মরটালিটি
ফর কোভিড-১৯’ শিরোনামের মহামারী নিয়ে এই প্রারম্ভিক সমীক্ষা করেছেন নিউ ইয়র্ক ইনস্টিটিউট
অব টেকনোলোজির (এনওয়াইআইটি) একদল গবেষক।
তারা
দেখতে পেয়েছেন, যেসব দেশে নাগরিকদের বিসিজি টিকা দেওয়া হয়ে থাকে সেগুলোতে কোভিড-১৯
আক্রান্তের সংখ্যা ও এতে মৃত্যু কম হচ্ছে।
কোভিড-১৯
এ যে দেশে মৃত্যু হয়েছে সবচেয়ে বেশি মানুষের সেই ইতালিতে কখনও সার্বজনীন বিসিজি টিকা
দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে
জাপানে প্রথম দিকে এই ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলেও তারা মানুষকে ঘরবন্দি করার এই রকম কঠোর
পদক্ষেপ না নিলেও তাদের ওখানে মৃত্যু হার কম।
জাপান
১৯৪৭ সাল থেকে বিসিজি টিকা দিয়ে আসছে। দেশটিতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ও মৃত্যু হার কম
হওয়ার বিষয়টি খেয়াল করে এই সমীক্ষা শুরু করেন নিউ ইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজির
সহকারী অধ্যাপক ও সমীক্ষার নেতৃত্বদাতা গনজালো ওটাজু।
তিনি
বলেন, এই মহামারী শুরু হয়েছে যেখানে সেই চীনে বিসিজি টিকা দেওয়া হলেও তা ১৯৭৬ সালের
আগে ততটা ভালো ছিল না। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো যেসব দেশ এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে
পেরেছে, তাদের সার্বজনীন বিসিজি টিকী নীতি রয়েছে। স্বল্প আয়ের দেশগুলো করোনাভাইরাস
আক্রান্তের যে তথ্য দিচ্ছে তা এখানে যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে
না।
করোনাভাইরাসে
খুব বেশি আক্রান্ত ইরানেও বিসিজি টিকা দেওয়া হয় ১৯৮৪ সাল থেকে, অর্থাৎ সেখানে ৩৬ বছরের
বেশি বয়সীরা সুরক্ষিত নয়।
বেশি
আয়ের দেশগুলোর মধ্যে কোভিড-১৯ ব্যাপকভাবে ছড়ানো যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিতে বিসিজি টিকা
শুধু তাদেরই দেওয়া হয়, যাদের ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়।
অন্যদিকে
জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে সার্বজনীন টিকা চালু থাকলেও কয়েক বছর থেকে
কয়েক দশক আগে এসব দেশে বন্ধ করা হয়।
বিসিজি
টিকাকে দেখা হয় যে, এটি শরীরে ভাইরাল সংক্রমণ বা সেপসিস ১১ এর বিরুদ্ধে বৃহত্তর সুরক্ষা
তৈরি করে।
সমীক্ষায়
দেখা গেছে, বিসিজি টিকা দেওয়া দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ কম, এটা এই ইঙ্গিত দেয় যে বিসিজি
সুনির্দিষ্টভাবে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা তৈরি করতে পারে।
কোনো
জনগোষ্ঠীর মধ্যে সার্বজনীন বিসিজি টিকা দেওয়া করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে
পারে এবং অন্যান্য পদক্ষেপের মাধ্যমে সংক্রমণের হার কমানো বা এর বিস্তার বন্ধ করা যায়।
সমীক্ষায়
বিসিজি টিকা কোভিড-১৯ এর বিস্তার কম-এ দুটি বিষয় পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বলা হলে আদতেও
এই টিকা ভাইরাসটি প্রতিরোধে কোনো মাত্রায় ভূমিকা রাখে কি না, তা বের করতে অন্তত ছয়টি
দেশে পরীক্ষা চলছে।
আর
নভেল করোনাভাইরাস নতুন ধরনের একটি ভাইরাস হওয়ায় তা নিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গবেষকরা
এখনও ব্যস্ত গবেষণায়।