বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত নৌ মন্ত্রী থমাস মোডলি এক ঘোষণায় ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্ট থেকে ক্যাপ্টেন ব্রেট ক্রোজিয়ারকে প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
বিমানবাহী ওই রণতরীটির শতাধিক আরোহীর দেহে প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো।
উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লেখা ওই চিঠিতে ক্রোজিয়ার যুদ্ধ ছাড়া মার্কিন সেনাদের মৃত্যু ঠেকাতে উর্ধ্বতনদের আরও তৎপর হওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তার লেখা ওই চিঠি পরে মার্কিন গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়।
“আমরা এখন যুদ্ধে নেই। নাবিকদের মরার দরকার নেই। আমরা যদি এখনই পদক্ষেপ না নেই, আমরা আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সম্পদ- আমাদের নাবিকদের সঠিক যত্ন নিতে ব্যর্থ হবো,” রণতরীর কমান্ডার ক্যাপ্টেন ব্রেট ক্রোজিয়ার মার্কিন নৌবাহিনীর প্যাসিফিক ফ্লিটের কাছে সোমবার পাঠানো এক মেমোতে এমনটিই লিখেছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তিন জন কর্মকর্তা সিএনএনকে নিশ্চিত করেছিলেন।
মেমোতে কমান্ডার ক্রোজিয়ার নাবিকদের জীবন রক্ষার ও বিশাল ওই রণতরীটিতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেয়ারও আর্জি জানান।
“রোগের বিস্তার অব্যাহত আছে এবং ত্বরান্বিত হচ্ছে,” বলেছিলেন তিনি।
ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্ট পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের মাইক্রোনেশীয় দ্বীপ গুয়ামে মার্কিন নৌঘাঁটিতে আছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। জাহাজটিতে নারী ও পুরুষ মিলিয়ে চার হাজারের বেশি নাবিক আছেন।
বৃহস্পতিবার ক্রোজিয়ারের চিঠির সমালোচনা করে মোডলি বলেন, রণতরীটির কমান্ডার ‘অত্যন্ত দুর্বল মাপকাঠিতে যাচাই করে’ ওই মন্তব্যগুলো করেছিলেন।
তবে চিঠি লেখার জন্য নয়, সেটি গণমাধ্যমে দেয়ার জন্য ক্রোজিয়ারকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও জানান এ ভারপ্রাপ্ত নৌ মন্ত্রী।
“চিঠিটি এমন এক ধারণা তৈরি করেছে, যেন মনে হচ্ছে নৌবাহিনী তার দায়িত্ব পালন করছে না, সরকার তার দায়িত্ব পালন করছে না। এগুলো সত্য নয়,” বলেছেন মোডলি।
রণতরীটির আক্রান্ত নন এমন নাবিকদের নৌযানের বাইরে গুয়ামে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত এ দ্বীপাঞ্চলের গভর্নর বলেছেন, স্থানীয়দের সঙ্গে মেলামেশা না করলে ওই নাবিকরা যতদিন খুশি ততদিনই গুয়ামে থাকতে পারবেন।
এতদিন পর্যন্ত মার্কিন রণতরীর নাবিকদের নৌঘাঁটির বাইরে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল বলে বিবিসি জানিয়েছে।
মার্কিন নৌ কমান্ডারকে বরখাস্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন ডেমোক্রেট নেতারা।
“ক্যাপ্টের ক্রোজিয়ার যদিও সুস্পষ্টভাবেই চেইন অব কমান্ড লংঘন করেছিলেন, তারপরও এমন সংকটময় মুহুর্তে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার ফলে সেনাদেরই আরও বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়া হল, আমাদের বহরের প্রস্তুতিতে বিপদে ফেলা হল। বিস্তৃত তদন্ত ছাড়া দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে নৌযানে থাকা অবস্থায় বরখাস্তের মাধ্যমে ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্টের চলমান সংকটের সমাধান হবে না,” বিবৃতিতে বলেছেন প্রতিনিধি পরিষদের সশস্ত্র বাহিনী বিষয়ক কমিটির ডেমোক্রেট নেতারা।