এছাড়া মৎস্য, পোল্ট্রি
ও ডেইরি খাতের উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন ব্যবস্থা সচল রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
শনিবার রাজধানীর ফার্মগেইটে
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে নিয়ন্ত্রণ কক্ষটি চালু হবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে
মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়,
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মৎস অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে
বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ পরিচালিত হবে। এখানকার নম্বর ০২-৯১২২৫৫৭।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব
অমিতাভ চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে, “দেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবজনিত
পরিস্থিতিতে মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতের নানাবিধ সঙ্কট মোকাবেলায় এবং প্রাণিজ আমিষ
সরবরাহ সচল রাখার লক্ষ্যে মাছ, মাংস, দুধ, ডিমসহ, পোল্ট্রি, পশু ও মৎস্য খাদ্য বা বিভিন্ন
উপকরণ উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণনে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের
কন্ট্রোল রুম চালু করা হল।”
৪ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল
পর্যন্ত সাপ্তাহিক ও সাধারণ ছুটির দিনেও সচল থাকবে এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
অধিদপ্তরের আটজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়ে এতে বলা হয়েছে, তারা মন্ত্রণালয়ের
বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা মাঠ পর্যায়ের অফিস, এই সেক্টরের বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে
সমন্বয় করে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা
তাদের জন্য নির্ধারিত দিনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের
কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালন করবেন।
নভেল করোনাভাইরাসের
প্রকোপের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ায় দেশের পোল্ট্রি শিল্পে ক্ষতির পরিমাণ
এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ
সেন্ট্রাল কাউন্সিল-বিপিআইসিসি।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে
পোল্ট্রির সবগুলো খাতের জন্য ৩০% আর্থিক প্রণোদনা দাবি করেছিল বিপিআইসিসি।
করোনাভাইরাস নিয়ে পোল্ট্রি
মাংস, দুধ ও ডিম সম্পর্কিত গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়া এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে
মাংস, দুধ ও ডিমের ভূমিকা তুলে ধরে মন্ত্রণালয়ের ‘লাইভস্টক ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের’
আওতায় গণমাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক
প্রচারণা কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে
‘মাছ, মাংস ও ডিম খাওয়া ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ’ মর্মে ভোক্তা পর্যায়ে প্রচারণা চালোনোর
বিষয়টিও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এ সময় মাছ ও মাংসের
মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোর গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় নিয়মিত দুধ, ডিম,
মাছ ও মাংস খাওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মন্ত্রী জানিয়েছেন,
ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে পোল্ট্রি, ডিম, একদিন বয়সী মুরগীর বাচ্চা, হাঁস, মুরগী ও
গবাদিপশুর খাদ্য, দুগ্ধজাত পণ্য, অন্যান্য প্রাণি ও প্রাণিজাত পণ্য, মাছ, মাছের পোনা
ও মৎস্য খাদ্য সরকারঘোষিত ছুটির মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন সচল রাখার
ব্যবস্থা নিতে সব জেলা প্রশাসক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি
দেওয়া হয়েছে।
পোল্ট্রি ও মৎস্য খাদ্যের
সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানিকৃত কাঁচামালের পরীক্ষাগার দ্রুত চালু করার ব্যাপারেও যোগাযোগ
করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আশা করছি
শিগগিরই চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিআরটিসি
ল্যাব চালু হবে।”
খামারে উৎপাদিত দুধ
সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণের জন্য মিল্কভিটাকে অনুরোধ জানিয়েছে
মন্ত্রণালয়।
সংরক্ষণসহ ভোক্তার
কাছে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দুধ পৌঁছে দেওয়ার কাজে প্রাণ, আড়ং, আকিজকে অনুরোধ জানানো
হয়েছে।
শ ম রেজাউল করিম জানিয়েছেন,
করোনাভাইরাস সঙ্কটে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক খামারিদের জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ
ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের মাধ্যমে প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি সরকারের
বিবেচনায় রয়েছে।
তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত
খামারিদের ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ ও কিস্তি স্থগিত করার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে
ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে জানিয়েছেন মন্ত্রী।