ক্যাটাগরি

ধ্বংসস্তুপ থেকে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন কোহলি

ওই অধ্যায় পেছনে ফেলে কোহলি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন প্রবল বিক্রমে। সীমিত ওভারের
মতো টেস্টেও ছুটেছেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে। রানের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছেন রেকর্ড বই। জিতে
চলেছেন একের পর এক চ্যালেঞ্জ। পরের ইংল্যান্ড সফরে (২০১৮ সালে) ৫৯৩ রান করে তিনিই ছিলেন
সিরিজের সর্বোচ্চ স্কোরার।

তবে তার ২০১৪ সালের সফরের ব্যর্থতা নিয়ে চর্চা হয় এখনও। কোহলি জানালেন,
ওই সফরের দুঃসহ অভিজ্ঞতাই তাকে নতুন করে ভাবিয়েছে নিজের ক্রিকেট নিয়ে।

“আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে তলানির অধ্যায় ২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফর। সেটি
এমন একটি সময়, একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে আপনিও (পিটারসেন) বুঝতে পারবেন… সকালে ঘুম থেকে
উঠেই আমি বুঝতে পারতাম, রান করার কোনো সম্ভাবনাই নেই আমার। তার পরও বিছানা ছাড়তে হয়েছে,
খেলার পোশাক পরতে হয়েছে, মাঠে গিয়ে ওই প্রক্রিয়াটার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে।”

“ প্রতি দিনই জানতাম যে নিশ্চিত ব্যর্থ হতে যাচ্ছি, এটি আমাকে পুরোপুরি
গ্রাস করেছিল। পুরোপুরি বিধ্বস্ত দিয়েছিল। এরপরই আমি নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছি, ওই
অবস্থার ভেতর দিয়ে নিজেকে আর কখনোই যেতে দেব না।”

সেবার ১০ ইনিংসের ৭টিতেই কোহলি আউট হয়েছিলেন স্লিপে বা কিপারকে ক্যাচ দিয়ে।
এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন দুটিতে, একটিতে বোল্ড। স্টাম্পের বাইরে কিংবা ভেতরে আসা বল, সবদিক
থেকেই টেকনিক মনে হয়েছিল ভীষণ নড়বড়ে।

তবে কোহলি নিজে মনে করেন, টেকনিকের চেয়েও বড় সমস্যা ছিল মানসিক।

“ টেকনিকের ব্যাপারটিও কিন্তু পুরোপুরি মানসিক। আমরা এখন এমন এক যুগে খেলছি,
যেখানে ফাস্ট বোলারকেও ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে মারতে হয়। কোচরা তো আর সেসব শেখায় না।
উদ্ভাবনী কিছু করতে হয়। প্রতিপক্ষের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকতে হয়। যদি ভাবতে থাকি যে
দলকে কীভাবে জেতাব, এই ব্যাপারগুলি মাথায় আসে।”

নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছেন কোহলি। নিজেকে গড়েছেন নতুনভাবে। তরুণদেরও
বলছেন একই ভুল না করতে।

“ তরুণ যারা শুনছে, সবাইকে বলছি, অমনটি হয়েছিল কারণ আমি নিজে খুব ভালো করতে
চেয়েছিলাম। রান পেতে মরিয়া ছিলাম। তখন ভাবতে পারিনি, এই পরিস্থিতিতে দল আমার কাছে কী
চায়। ওই সফরটি নিয়ে আমি খুব বেশি ভেবে ফেলেছিলাম যে, এখানে টেস্টে ভালো করলেই মনে হবে
আমি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছি।”

“এই ভাবনাগুলোই আমাকে খেয়ে ফেলেছিল। ক্রমাগত কেবল তলানির দিকেই ধাবিত হয়েছি,
এটি থেকে বের হতে পারিনি। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা! ”

কোহলির এখন ইংল্যান্ডে দুটি টেস্ট সেঞ্চুরি, অস্ট্রেলিয়ায় ৬টি। দক্ষিণ আফ্রিকা
ও শ্রীলঙ্কায় দুটি করে। নিউ জিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে একটি করে। কেবল বাংলাদেশেই
একটি টেস্ট খেলে পাননি সেঞ্চুরি।

২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফর পর্যন্ত ২৯ টেস্ট খেলে ব্যাটিং গড় ছিল ৩৯.৪৬।
সেই সফরের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৫৭ টেস্টে গড় ৬১.১৯।