সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়কে আইসোলেশনে পাঠানো
হয়েছে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, অ্যাম্বুলেন্স চালক ও মৃতের স্বজনসহ ১৫ জনকে
হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন।
এর আগে বন্দর উপজেলার রসুলবাগের লকডাউন করা
এলাকাটির নিরাপত্তায় পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী মোতায়েন করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ আহমেদ
জানান, আইইডিসিআর থেকে ২ এপ্রিল ওই নারীর পরীক্ষার রির্পোট করোনাভাইরাস পজেটিভ
আসে।
“বিষয়টি আমাদের জানানোর পর ওই এলাকায় গিয়ে তথ্য
সংগ্রহ করে অর্ধশতাধিক পরিবারকে লকডাউনে রাখা হয়।
“ওই নারীকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারী জরুরি
বিভাগের চিকিৎসক, ইনজেকশনপুশকারী ব্রাদার এবং প্যাথলজি বিভাগের তিনজনসহ মোট সাতজন
স্টাফকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একজনকে আইসোলশনে রাখা হয়েছে।
“এছাড়া যে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মৃতের
এক্সরে করা হয়েছিল সেখানকার তিনজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।”
ওই নারীর মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায়
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জরুরি সভা হয়। সভায় জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন,
সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ, বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শুক্লা সরকার,
চিকিৎসক ও আইনশৃংখলাবাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন জানান, বন্দরের
রসুলবাগের একাংশ লকডাউন করা হয়েছে।
“পুরো এলাকা আইনশৃংখলা বাহিনীর ও প্রশাসনের
সদস্যরা ঘিরে রেখেছে।”
যাদের লকডাউনে রাখা হয়েছে তাদের খাবার চিকিৎসাসহ
সার্বিক ব্যবস্থাপনা প্রশাসন করবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)
কর্মকর্তা শুক্লা সরকার জানান, ওই মৃত নারীর বাড়িসহ আশেপাশের একশ পরিবারকে
লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে।
“পরিবারগুলোর সদস্যদের কাছে ইউএনও, সিভিল সার্জন,
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ওসিসহ সবার মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে। যাতে অন্য
কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক জানাতে পারেন।”
এর পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারকে চাল ডালসহ যেকোনো
সামগ্রী প্রয়োজন হলে ফোন করে জানালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সরবরাহ করা হবে বলে
জানান তিনি।
“পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ওই পরিবারের
সদস্যদের ঘরেই থাকবে।”
‘করোনাভাইরাসে নারীর মৃত্যু’, নারায়ণগঞ্জে এলাকা ‘লকড ডাউন’]
গত ২৯ মার্চ সন্ধ্যায়
বন্দর উপজেলার রসুলবাগের বাসিন্দা ওই নারী শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য
শহরের মন্ডলপাড়ায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এ সময়
হার্টের রোগী ওই নারী শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বলে জানায়।
ওই নারীকে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে নেবুলাইজ ও
এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষা করা হয়।
এক্স-রে রির্পোট দেখে করোনাভাইরাস সন্দেহ হলে
তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। হাপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে
তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাপাতালে নেওয়া হয়।
তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে কুর্মিটোলা
হাসাপাতলে পাঠায় তাকে। এরপর পরিবারের লোকজন তাকে বন্দরের বাড়িতে নিয়ে আসে।
পরদিন ৩০ মার্চ ওই নারী আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে
কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। কুর্মিটোলা হাসপাতাল ওই নারীর
নমুনা সংগ্রহ করে রাখে।
এদিকে শুক্রবার বিকালে ওই নারী অসুস্থ হয়ে শহরের
পাইকপাড়ায় একটি বাড়িতে ছিলেন। ওই বাড়ির আট সদস্যকেও হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে
নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।