ক্যাটাগরি

নিজেরা রান্না করে ক্ষুধার্তের কাছে নিচ্ছেন সৈকত ও তার বন্ধুরা

গত ২৫ মার্চ থেকে টানা
১১ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে খাবার রান্না করে প্যাকেট হাতে শহরের রাস্তায়
থাকা মানুষগুলোর কাছে ছুটে চলছেন তারা। প্রথমে নিজেদের উদ্যোগে প্রতিদিন রাতে ২০০ জনকে
খাবার দিলেও অনেকের সহযোগিতায় এখন ৫০০ জনকে খাবার দিচ্ছেন সৈকতরা।

সৈকত জানান, বর্তমানে
অনেকের সহায়তায় তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছাড়াও রাজধানীর হাতিরপুল, নীলক্ষেত,
আজিমপুর, চাঁনখারপুল ও গুলিস্তানসহ আশপাশের  
এলাকায় ছিন্নমূল ও ভাসমান মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন।

তাদের এই কর্মতৎপরতায়
সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন সৈকতের বন্ধু-বান্ধবসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

তানভীর হাসান সৈকত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফর্মেন্স বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী।
গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল
থেকে সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ
রোধে গত ১৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে পরিস্থিতি বেগতিক
দেখে সব আবাসিক হলও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর টিএসসির একটি অতিথি কক্ষে অবস্থান করে
সৈকত এই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

সৈকত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে আজকে মানুষকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হচ্ছে।
কিন্তু যারা রাস্তার মানুষ, যারা প্রতিবেলা খাবারের জন্য শহরের পথে পথে ঘুরে বেড়ান
তাদের হোম কোয়ারেন্টিন কোথায় হবে?

“দিন যত যাচ্ছে শ্রমজীবী
দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলো আরও বেশি ক্রাইসিসে পড়ছে। ক্রাইসিস দিন দিন আরও বাড়তে
থাকবে মনে হচ্ছে। আমরা যারা মাঠে কাজ করছি ইতোমধ্যেই আমরা বুঝতে পারছি, মানুষ কতটা
হাহাকারে আছে। মানুষের  রোজগার নেই, দুমুঠো
খাবার নেই, টিকে থাকার ভরসাও নেই। এক অজানা গন্তব্যের ভেতরে প্রবেশ করছে তারা।”

শহরের রাস্তায় মানুষের
অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি চাই না এই মহামারীর সময়ে রাস্তায় কেউ খাদ্য
সংকটে মারা যাক।এজন্যই তিন-চার জন বন্ধুর সাহায্যে আমি ফুটপাতে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলোর
জন্য খাবার রান্না করে তাদের কাছে ছুটে যাই। শহরে রাস্তায় বাঁচার জন্য সংগ্রাম করা
মানুষগুলোর কাছে যখন খাবার নিয়ে  যাই তখন অবাক
হই। এরা কতটা ক্ষুধার্ত হলে খাবারের কথা শুনে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠে! যতটুকু সম্ভব হচ্ছে
মানুষের সহযোগিতায় তাদের কাছে খাবার নিয়ে যাচ্ছি এবং আমার এই কাজ অব্যাহত থাকবে।”