ক্যাটাগরি

বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক বন্ধ থাকলে ব্যবস্থা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

এই মহামারীর সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে তিনি
এই হুঁশিয়ারি দেন।

নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে চেম্বারে বসছেন না
অনেক চিকিৎসক; অনেক জায়গায় টেকনিশিয়ানরা কর্মস্থলে না থাকায় রোগ
নির্ণয়ের পরীক্ষাও বন্ধ আছে বলে
প্রায় রোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ আসছে।

অনেক রোগী
কয়েক হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে মারা
গেছেন- এমন ঘটনা প্রায়ই আসছে
গণমাধ্যমে। রোগী রেখে
চিকিৎসকদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও পাওয়া
গেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রাইভেট হাপসাতাল কাজ কম
করছে।  ক্লিনিক ও চেম্বারগুলো অনেকাংশে বন্ধ আছে। আমরা
সামাজিক মাধ্যমে জানতে পারছি…… আমরা নিজেরাও দেখতে পাচ্ছি।

“কাজেই
এ সময়ে আপনাদের পিছপা হওয়াটা যুক্তিসঙ্গত নয়। মানুষের পাশে দাঁড়ান, মানুষকে সেবা দিন।
আমরা কিন্তু এটা
লক্ষ্য করছি। পরবর্তীকালে যা যা
ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা
কিন্তু সেসব ব্যবস্থা নিতে পিছপা
হব না। ”

ধানমণ্ডির ব্যস্ত যেসব হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেখাতে নিয়মিত রোগীর ভিড় লেগে থাকতো, সেখানে চিকিৎসকরা চেম্বারে বসছেনও কম; সঙ্গত কারণে রোগীরও ভিড় নেই।

এমন পরিস্থিতিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে
দুর্ভোগ ও ভোগান্তির
কথাও তুলে ধরেছেন অনেক রোগী।

তিনি জানান,
রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালকে কোভিড-১৯
রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড করা হয়েছে।

ঢাকায় আইইডিসিআর ছাড়াও আইপিএইচ, আইসিডিডিআর বি, আর্মড ফোর্সেস ইন্সটিটিউট অব প্যাথলজি, শিশু হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরী মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার,ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস নির্ণয়ে আরটি-পিসিআর টেস্ট শুরু
হয়েছে বলেও জানান
স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ট্রপিকাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস,  কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ,রংপুর মেডিকেল কলেজেও কোভিড-১৯  এর পিসিআর পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

নভেল করোনাভাইরাসের লক্ষণ-উপসর্গ দেখা দিলে
পরীক্ষা করা ‘জরুরি’
জানিয়ে জাহিদ মালেক
বলেন, “আশা করি সকলে পরীক্ষা করার জন্য
আসবেন। পরীক্ষা করলে নিজেও নিরাপদে থাকবেন, জানতে
পারবেন, আপনার অবস্থাটা। সেই সাথে
সাথে আপনার পরিবারকেও সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।

“পরীক্ষায় কোনো দোষ
নাই, সামাজিক কোনো বাধা নাই।
এ জিনিসটি পরীক্ষার মাধ্যমে করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত করে আমরা আস্তে
আস্তে এটাকে নির্মূল করতে পারব।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ
ব্রিফিংয়ে জানান, দেশের
প্রায় ২০-২২টি
জেলা থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো তথ্য তারা
পাননি।

রোগীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন.
“প্রত্যেকটি সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছে। বড় বড়
কয়েকটি হাসপাতাল শুধু করোনাভাইরাসের জন্যই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 
যে কোনো রোগী,
যাদের হাঁচি কাশি
আসে ওই ধরণে
রোগীরা তারা ঐ
সমস্ত হাসপাতালে যাবেন, চিকিৎসা পাবেন।”

নভেল করোনাভাইরাস শনাক্তে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ৭১ হাজার টেস্টিং কিট ও
৬৪ হাজার ১১০টি
সুরক্ষা পোশাক-পিপিই
মজুদ রয়েছে বলে
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান।

চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,
“বেশি বেশি করে
টেস্ট করেন, টেস্ট
কিটের সঙ্কট নাই।
পরীক্ষা চালিয়ে যাবেন। পরীক্ষার মাধ্যমেই আমরা জানতে
পারি, কতগুলো ব্যক্তি সামাজিকভাবে সংক্রমিত হয়েছেন।

“আমাদের হাতে যথেষ্ট পিপিই রয়েঠে। সকল হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছি। যখনই প্রয়োজন পেয়ে যাচ্ছি। ”

করোনভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ‘ভুয়া নিউজ’ জনমনে
বিভ্রান্তির পাশাপাশি কাজকেও ব্যাহত করছে
মন্তব্য করে জাহিদ
মালেক বলেন, “এটা
আমরা মেনে নিতে
পারি না। সরকার
এ বিষয়ে যথাযথ
ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

গণমাধ্যমকর্মীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধে খবর প্রচার ও
পরামর্শ দিতে অনুরোধও জানান তিনি।