শনিবার দুপুরে জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার শিবদিঘি ও ডায়াবেটিক মোড়ে এমন ব্যতিক্রমী
প্রচারণা করা হয় বলে জানান ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার সোহাগ শাহা।
দুপুরে জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার সোহাগ শাহা তার ফেইসবুকে
‘ব্যতিক্রমভাবে করোনা প্রচারণার’ একটি ভিডিও আপলোড করেন। এরপর ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে।
আপলোড করা ভিডিওতে কমেন্টে মোহাম্মদ কামরুজ্জামান নামের একজন লিখেছেন,
“চমৎকার। আনন্দের নির্যাসটুকু খুঁজে বের করতে পারলে সেটা ভয়ঙ্কর অবস্থাকেও প্রাণবন্ত
করতে পারে। এটা তারই প্রমাণ।”
শিউলি বানু নামের একজন লেখেন, “ধারণাটি সত্যিই দুর্দান্ত। কারণ বাংলাদেশি
জনগণ গান পছন্দ করে, যখন এই গান গেয়ে সমস্ত লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আমি এ পদক্ষেপটির
প্রশংসা করছি, সর্বোপরি সৌভাগ্যের।”
এছাড়াও কমেন্টে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিনা জাহান লিটা,
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার পারভেজ পুলকসহ অনেকেই এমন উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ
জানিয়েছেন।
ভিডিওটি শেয়ার করে নাহিদ মেহেদী রহমান লিখেছেন-‘অবুঝ, সবজান্তা বাঙালি
তোমাদের নিয়েই হাসাহাসি করে।’
“তোমাদের এ ঋণ কোনদিন শোধ হবে না।”
ভিডিওতে দেখা যায়, সিনিয়র সহকারী কমিশনার সোহাগ শাহা সাথে পুলিশ নিয়ে রাস্তায়
রাস্তায় ঘুরে ঘুরে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে গানের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা
করছেন।
সোহাগ শাহার পেছনে দুইজন হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে গান গাইছেন, অন্য একজন
হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে নিয়ে আছেন এবং মানুষকে সচেতন করে তুলছেন। এছাড়াও রাস্তায় জড়ো
হয়ে থাকা মানুষদের ঘরে ফিরতে অনুরোধ করছেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার সোহাগ শাহা।
গানের বাণী-সুখে থাকো ভালো থাকো, মনে রেখো করোনারে, বুকের ভিতর নানা ব্যাথা,
চারিদিকে করোনার কথা; হাট বাজার রাখো ফাঁকা, ঘরে থাক একা একা, যাও বন্ধু বলো তারে,
সে যেন থাকে ঘরে, সুখে থাকো ভাল থাকো, মনে রেখো করোনারে, মেঘের উপর আকাশ উড়ে, সবদিকে
করোনার বাসা, ঘরে বন্ধু থাক পাশা, যাও বন্ধু যারে উরে, তারে কইও আমার কথা।
এমন উদ্যোগ সম্পর্কে সিনিয়র সহকারী কমিশনার সোহাগ শাহার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “আমরা ব্যক্তিভাবে কী করে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা যায়, তারা
কীভাবে আমাদের আইনের প্রতি আরও শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজেদের মধ্যে তাদের দায়িত্ববোধ জাগ্রত
করে সেদিক লক্ষ্য করে আমরা প্রচারণাটা ভিন্ন ভাবে করেছি।
“মানুষদের সাথে খারাপ ব্যবহার না করে বরং ভালোভাবে আমরা তাদেরকে বোঝাতে
সক্ষম হই আসলেই তাদের বাড়িতে থাকা উচিত।”
তিনি বলেন, “আমরা এটা মনে করি প্যারোডি গানের মাধ্যমে যদি মানুষদের বোঝাই
বা প্রচারণা করি তারা এ বিষয়টা খুব ভালোভাবে গ্রহণ করবে এবং মানুষরা আমাদের প্রতি আরও
বেশি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তারা চেষ্টা করবে বেশিক্ষণ বাসায় অবস্থান করার এবং তারা নিজেরাই
এটা ছড়িয়ে দেবে যাতে করে অন্যরাও বাসা থেকে বের না হয়।”
প্যারোডি গানটি কীভাবে তৈরি করলেন এমন প্রশ্নে সোহাগ শাহা জানান, তারা
সামান্য মূল গানের সামান্য পরিবর্তন করেছেন।
স্থানীয় শিল্পী সম্রাট সারোরয়ার ও রাণীশংকৈল উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুল
ইসলাম গেয়েছেন।
মানুষজন এ প্রচারণাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেছে বলে মনে করছেন তিনি।