সোমবার
সকাল ১১টার দিকে নীলফামারী পৌর শহরের শাহীপাড়ায় প্রবেশের প্রধান সড়কসহ পাড়াটির সব অলিগলি
বন্ধ করে দিয়ে এ ‘লকডাউন’ লেখা ঝুলিয়ে দেন তারা।
এর পরপরই
একই ভাবে শহরের জুম্মাপাড়া, বাবুপাড়া আলমগীরের মোড়, শান্তিনগর মহল্লাবাসীও তাদের পাড়ার
রাস্তায় ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে
অন্তত দুইজনের মৃত্যু এবং বেশ কয়েকজন আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ায় গত রোববার সেখানকার সিটি
মেয়রের ‘কারফিউ’ দাবি পর রাতেই প্রশাসন কঠোরভাবে সব বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়; তবে ‘লকডাউন’
বলেনি। বরং রায়ণগঞ্জের এসপি একে ‘অঘোষিত লকডাউন ঘোষণা’ বলে অবিহিত করেন।
‘লকডাউন’
শব্দটি ব্যবহারে সরকারি দ্বিধা স্পষ্ট হওয়ায় নীলফামারীর শহরবাসী প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে
না থেকে নিজেরাই এমন ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে বসলেন।
নীলফামারী
পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিছুর রহমান বলেন,“শাহীপাড়া ও জুম্মাপাড়া পৌর
সভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত।
“এ পাড়া
দুটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগী নেই। এলাকাবাসী তাদের নিজেদের নিরাপত্তা
নিশ্চিত করতে শুধুমাত্রা পাড়ার সড়কগুলো লকডাউন করেছে।”
জুম্মাপাড়ার
বাসিন্দা নাঈম শাহরিয়ার পিউ (৪০) বলেন, “জেলা শহরের প্রধান সড়কসহ অন্যান্য সড়কে পথচারী
ও যানবাহন চলাচল সীমিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে আমাদের পাড়ার সড়ক দিয়ে অযাচিত
লোকজনের ও বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে।
“এতে করোনাভাইরাসের
সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় থাকে। সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে এবং নিজেদেরকে রক্ষার জন্য পাড়ার প্রধান
সড়কসহ সব অলিগলি বন্ধ করে পাড়াটি ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছি আমরা এলাকাবাসী।”

শাহীপাড়ার
বাসিন্দা ওয়াহেদ আলী তুফান (৪০) বলেন, “আমরা নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
“পাড়ায়
প্রবেশের প্রত্যেকটি সড়ক বন্ধ করায় পাড়ায় বাইরের মানুষ আসা ঠেকানো হয়েছে। এলাকাবাসী
জরুরি প্রয়োজনে সড়কে পায়ে হেঁটে চলাচল করছে।”
সড়ক বন্ধের
পাশাপাশি প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
“জরুরি
প্রয়োজনে কেউ প্রবেশ করতে চাইলে জীবাণুমুক্ত হয়ে প্রবেশ করতে হবে। পাড়ার কেউ বাইরে
গিয়ে ফিরে আসার সময় তাকেও জীবাণুমুক্ত হবে।”
এছাড়াও
পাড়ার বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঘর থেকে
না বের হন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে
নীলফামারী সদর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম বলেন, “করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা শহরের
বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বাসিন্দারা স্ব উদ্যোগে এ কাজ করেছেন।
“তবে সরকারের
এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”
করোনাভাইরাস
মোকাবেলায় সরকার যেহেতু চাচ্ছে ঘর থেকে যেন লোকজন বের না হয়, সে উদ্দেশ্যে কাজটি করে
ভালোই হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।