বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি
মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ ২২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের কাছে ৮৫ কোটি ডলার, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের কাছে
৭৫ কোটি ডলার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবির কাছে ৬০ কোটি ডলার, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক-এআইআইবির কাছে ২৫ কোটি ডলার এবং
ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক-আইডিবির কাছে ১৫ কোটি ডলার চাওয়া
হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনৈতিক
সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা করোনাভাইরাস থেকে দেশের মানুষ ও অর্থনীতিকে রক্ষায় এই
জরুরি সহায়তা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। জরুরি বাজেট সাপোর্ট এবং কোভিড ১৯ মোকাবিলা প্রকল্পের জন্য এই সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
“এসব দাতা সংস্থার
সঙ্গে আমাদের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ চলছে। শিগগিরই তারা সহায়তার
বিষয়ে আমাদের নিশ্চিত করতে পারেন।”
ইআরডির জাপান অনুবিভাগের অতিরিক্ত
সচিব শহীদুল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা-জাইকার কাছেও সহযোগিতা চেয়ে
চিঠি পাঠানো হয়েছে।
“তবে তারা একক
কোনও প্রকল্পে বা বাজেট সহায়তা হিসেবে সহায়তা দেয় না। তারা প্যাকেজ হিসেবে সহায়তা দিয়ে থাকে। এই পরিস্থিতিতে তারা হয়ত কারিগরি সহায়তা বা ঋণের
সুদ মওকুফের মতো সহায়তা দিতে পারে।”
করোনাভাইরাস মোকাবিলায়
জাপান চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়েও সহায়তা করতে পারে বলে আশা
করছেন তিনি।
ইআরডির বিশ্ব ব্যাংক অনুবিভাগের অতিরিক্ত
সচিব শাহাবুদ্দিন পাটোয়ারি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ব ব্যাংকের কাছে আমরা সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়ে ৮৫ কোটি ডলারের
সহায়তা চেয়েছি। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের বাজেট সহায়তা হিসেবে তিন কিস্তিতে
৭৫ কোটি ডলার প্রাপ্তির একটি চুক্তি বিদ্যমান রয়েছে। ওই চুক্তির প্রথম কিস্তিতে ২৫ কোটি ডলার আগেই
নিয়েছে সরকার। চুক্তির দ্বিতীয় কিস্তির ২৫ কোটি ডলার এবার জরুরিভাবে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
“আর বিদ্যমান পরিস্থিতিতে
দেশের অর্থনীতি সামাল দেওয়ার জন্য বিশ্ব ব্যাংকের কাছে নতুন করে
আরও ৫০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এর বাইরে কোভিড-১৯ এর অভিঘাত মোকাবিলা প্রকল্পের জন্য ১০ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে।
“সব মিলে বিশ্ব
ব্যাংকের কাছ থেকে মোট ৮৫ কোটি ডলার চেয়েছি।”
তিনি জানান, এর
মধ্যে গত শুক্রবার বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের জন্য ১০ কোটি ডলারের জরুরি সহায়তা বোর্ড সভায় অনুমোদন দিয়েছে। এই জরুরি সহায়তা
এখন ছাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে।
ইআরডির সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগের
যুগ্ম সচিব মো. মিজানুর রহমান জানান, সম্প্রতি ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) গ্রুপের কাছে ১৫ কোটি
ডলারের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
“গতকাল রোববার
তারা ওই চিঠির জবাবও দিয়েছেন। এ পর্যন্ত
তারা আমাদেরকে নিশ্চিত করেনি। তবে আমরা আশায় আছি।”
ইআরডির এডিবি শাখার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা
জানান, সরকার এডিবির কাছে যে ৬০ কোটি ডলার চেয়েছে তার মধ্যে ৫০
কোটি ডলার বাজেট সহায়তা হিসেবে আর বাকি ১০ কোটি ডলার কোভিড-১৯ মোকবিলা প্রকল্পের জন্য।
ইআরডির আরেকজন কর্মকর্তা জানান, আইএমএফ
করোনাভাইরাস মহামারী থেকে বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর অর্থনীতিকে
বাঁচানোর জন্য ৫০ বিলিয়ন ডলারের যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, সেখান
থেকেই বালাদেশ ৭৫ কোটি ডলারের সহায়তা চেয়েছে।
“এছাড়া এআইআইবির
কাছে যে ২৫ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে তার অনেকটাই নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে। শিগগির চুক্তিও
হতে পারে,” বলেন ইআরডির একজন কর্মকর্তা।