তিনি বলেছেন, “এবার আমরা আদালতে নির্দেশ অনুযায়ী তার দণ্ড কার্যকর করতে পারব।”
মাজেদকে গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা সংস্থাসহ যারা যুক্ত ছিলেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ দেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি মুজিববর্ষে একটি শ্রেষ্ঠ উপহার আমরা দেশবাসীকে দিতে পেরেছি।”
মঙ্গলবার ভোর আনুমানিক ৩টার দিকে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের একটি বিশেষ দল মিরপুর সাড়ে ১১ এলাকা থেকে মাজেদকে গ্রেপ্তার করে।
দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হলে বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত দণ্ডিত এই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরে এক ভিডিও বর্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “মাজেদ শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যায় অংশগ্রহণ করেনি, সে জেলহত্যায় অংশগ্রহণ করেছেন বলে আমাদের জানা রয়েছে।
“খুনের পরে জিয়াউর রহমানের নির্দেশ মোতাবেক সে বঙ্গভবন ও অন্যান্য জায়গায় কাজ করেছে।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। এরপর সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের আমলে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বিচারের পথ খোলে; মামলার পর বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর ফের শ্লথ হয়ে যায় মামলার গতি।
আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে দণ্ডিত পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয় সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), এ কে বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিনের (আর্টিলারি)।
কিন্তু ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া ছয় আসামি খন্দকার আবদুর রশিদ, এ এম রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান বিদেশে পলাতক থাকেন। তাদের মধ্যে মাজেদকে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো গেল।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে ক্ষমতায় এসে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান কীভাবে বিচারের বদলে খুনিদের ‘পুরস্কৃত’ করেছিলেন, ‘ইনডিমিনিটি’ অধ্যাদেশের মাধ্যমে কীভাবে বিচারের পথ বন্ধ করেছিলেন, সে সময় খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরিও দেওয়া হয়েছিল- সেসব কথাও ভিডিও বার্তায় বলেন মন্ত্রী।
তিনি জানান, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর আব্দুল মাজেদ আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। তার আগ পর্যন্ত দেশে বহাল তবিয়তেই ছিলেন।
পলাতক বাকি খুনিদেরও দেশে ফেরানোর প্রত্যয় জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “খুনিরা যেখানেই থাকুক, আমরা সবাইকে ফিরিয়ে আনব কিংবা যেখানেই থাকুক, আনার জন্য সর্ব প্রকার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।”