ক্যাটাগরি

বরিস জনসন আইসিইউতে, দেওয়া হয়েছিল অক্সিজেন

জনসনের অনুপস্থিতিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব যুক্তরাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমানোর লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত লড়াই যুক্তরাজ্যের সরকার ব্যবস্থাকেও বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে দেশটির প্রায় সাড়ে ৫ হাজার লোক ভাইরাসটিতে প্রাণ হারিয়েছেন; আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৫২ হাজার।

সামনের সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলেও বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।

মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কোভিড-১৯ এ বিশ্বব্যাপী সাড়ে ১৩ লাখের বেশি মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে; মৃতের সংখ্যা ৭৫ হাজারের কাছাকাছি।

৫৫ বছর বয়সী জনসনের দেহে গত মাসে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে; এরপর থেকে তিনি ডাউনিং স্ট্রিটের বাসভবনেই আইসোলেশনে ছিলেন।

আক্রান্ত হওয়ার ১০ দিন পরও জ্বর, কাশিসহ উপসর্গগুলো অব্যাহত থাকায় রোববার তাকে সেইন্ট টমাস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের ২৪ ঘণ্টায় তার অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে কোভিড-১৯ এর গুরুতর রোগীদের যেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়, সেই নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।

চিকিৎসাধীন জনসনকে অক্সিজেন দেওয়া হলেও তার এখনও চেতনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ডাউনিং স্ট্রিট।

যদি ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন পড়ে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে যেন তা দেওয়া যায় তা নিশ্চিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে নেওয়া হয়েছে, বলেছে তারা।

“তার এখনো ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়নি। প্রধানমন্ত্রী সামান্য পরিমাণ অক্সিজেন নিয়েছে, তিনি সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার চিকিৎসক দল তাকে দেখভাল করছেন, তিনি সেইন্ট টমাস হাসপাতালের সেরা চিকিৎসকদের সেবা পাচ্ছেন,” মঙ্গলবার এলবিসি রেডিওকে এমনটাই বলেছেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ বিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল গোভ।

বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে জনসনই প্রথম, যিনি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন।

“প্রধানমন্ত্রীর সক্ষম না থাকলে কে তার উত্তরসূরীর দায়িত্ব পালন করবেন যুক্তরাজ্যে এ সংক্রান্ত কোনো নিয়ম না থাকায় জনসন তার সহকারী হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডমিনিক রাবকে ‘প্রয়োজন অনুযায়ী’ দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন,” বলেছে ডাউনিং স্ট্রিট।

রাব কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সরকারের এক জরুরি বৈঠকে সভাপতিত্ব করতে মঙ্গলবার ডাউনিং স্ট্রিটে যান বলেও রয়টার্স জানিয়েছে।

এর আগে সোমবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জনসন তার ‘মনোবল চমৎকার আছে’ বলে জানিয়েছিলেন। একইদিন এক সংবাদ সম্মেলনে রাব জানান, প্রধানমন্ত্রীই এখনো সরকার চালাচ্ছেন। যদিও শনিবারের পর জনসনের সঙ্গে তার আর কথা হয়নি বলেও নিশ্চিত করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমিয়ে আনতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাজ্য এখন কার্যত লকডাউন হয়ে আছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। আগামী সপ্তাহে এ বিধিনিষেধগুলো ফের পর্যালোচনা করার কথা রয়েছে।

দেশটির অনেক নাগরিক সরকারের কঠোর নির্দেশনা মানছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন কয়েকজন মন্ত্রী। যে কারণে লকডাউনের মেয়াদ বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা।

 
করোনাভাইরাস: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন হাসপাতালে