ক্যাটাগরি

হাসপাতাল ভর্তি না নেওয়ায় সড়কে সন্তান প্রসব

সোমবার রাত ৮টার দিকে গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র
থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে শহরের মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ নবজাতকের জন্ম হয়।

প্রসূতি মিষ্টি আকতার (২০) গাইবান্ধা সদর উপজেলার
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী।

এ  নবজাতকের বাবা আব্দুর রশিদ জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িতে তার
স্ত্রী মিষ্টি আকতারের প্রসব বেদনা ওঠে। তখন তাকে
একটি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকে করে গাইবান্ধা
মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যান। তবে ওখানে দায়িত্বরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা তৌহিদা বেগম ‘কোনো পরীক্ষা না করেই অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।’

তিনি তার স্ত্রীকে ভর্তি করানোর
জন্য ওই পরিদর্শিকাকে কয়েক দফা অনুরোধ করেন কিন্তু
তার অনুরোধ পরিদর্শিকা রাখেননি বলেন তিনি।

বাধ্য হয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে অন্যত্র যাওয়ার জন্য ইজিবাইকে ওঠার পর মিষ্টি আকতার ব্যথায় চিৎকার করতে শুরু করেন বলে
জানান তিনি।

“এ সময় গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র
থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে শহরের মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ওই ইজিবাইকের ভেতরেই একটি ফুটফুটে
নবজাতক প্রসব করে মিষ্টি তাকতার।”

এ ঘটনা প্রসঙ্গে গাইবান্ধা পৌর সভার ৬নং
ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদ আহমেদ বলেন, “এরপর প্রসূতি মায়ের প্রচুর
রক্তক্ষরণ হতে থাকলে উৎসুক জনতা খেপে গিয়ে মা ও শিশু কল্যাণ
কেন্দ্র ঘেরাও করে। ”

এ খবর পেয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে পৌঁছে
প্রসূতিকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি
আহ্বান জানান।

“পরে বাধ্য হয়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে
ভর্তি করে কর্তৃপক্ষ।”

তিনি আরও জানান, করোনাভাইরাস আতঙ্কে যদি কোনো কর্মচারী রোগীদের সাথে এ ধরনের
আচরণ করে থাকেন,
তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সমাজসেবক ওয়াজিউর রহমান রাফেল বলেন, “গাইবান্ধা
মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ ধরনের ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটিয়ে
থাকেন। তারা রোগী না দেখেই তারা শহরের ক্লিনিকগুলোতে যাওয়ার পরামর্শ দেন।”

বিষয়টিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা
নেওয়ার কথা বলেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার।

এ ঘটনা প্রসঙ্গে গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ
কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. সেকেন্দার আলী জানান, বিষয়টি
তদন্ত করে দায়িত্বরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।

তবে অভিযুক্ত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা
তৌহিদা বেগম মোবাইল ফোনে দাবি করেন-কাগজপত্র দেখে রোগীর
স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব সম্ভব নয় বলে ফিরিয়ে দেন তিনি।