ক্যাটাগরি

চীনের মৃত্যুহীন দিনে নিউ ইয়র্কে সর্বাধিক মৃত্যু

সোমবার নিউ ইয়র্ক রাজ্যে ৭৩১ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছেন গভর্নর অ্যান্ড্রু
কুমো; গত ১৪ মার্চ এই রাজ্যে কোভিড-১৯ রোগে প্রথম মৃত্যুর পর একদিনে এত মানুষের মৃত্যু
আর ঘটেনি।

নতুন ৭৩১ জনের মৃত্যুতে নিউ ইয়র্ক রাজ্যে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার
ছাড়িয়ে এখন ৫ হাজার ৪৮৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৮ হাজার
৮৩৬।

শুধু নিউ ইয়র্ক শহরেই মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৮৫ জন বলে জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির
হালনাগাদ পরিসংখ্যানে তথ্য মিলছে।

শুধু নিউ ইয়র্ক শহরে মৃত্যুর সংখ্যাও এখন গোটা চীনকে ছাড়িয়েছে, নভেল
করোনাভাইরাসের উৎস ভূমিকে। চীনে মৃতের সংখ্যা এখনও সাড়ে ৩ হাজারের নিচে রয়েছে।

চার মাস আগে গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম নভেল
করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়।

তবে এখন চীনে পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণে; সোমবার দেশটির মূলভূখণ্ডে কোভিড-১৯ রোগে কারও মৃত্যু
হয়নি এবং স্থানীয়ভাবে কেউ আক্রান্তও হয়নি বলে দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন
জানিয়েছে।

করোনাভাইরাস: চীনে ‘মৃত্যুহীন’ প্রথম দিন

চীনের যে উহান শহর থেকে ছড়িয়েছে নভেল করোনাভাইরাস, সেখানে পরিস্থিতির উন্নতিতে তুলে নেওয়া হয়েছে অবরুদ্ধ অবস্থা। ছবি: রয়টার্স

চীনের যে উহান শহর থেকে ছড়িয়েছে নভেল করোনাভাইরাস, সেখানে পরিস্থিতির উন্নতিতে তুলে নেওয়া হয়েছে অবরুদ্ধ অবস্থা। ছবি: রয়টার্স

চীনে
সংক্রমণ ঘটার দুই মাস পর ইউরোপকে বিপর্যস্ত করে এখন করোনাভাইরাস মহামারীর নতুন কেন্দ্র হয়ে
উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র।

দুদিন আগে নিউ ইয়র্কে দিনে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির হার কমলে তাতে আশাবাদী
হয়ে উঠেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও।

তবে নিউ ইয়র্কের গভর্নর কুমো মনে করছেন, ভয়াবহ পরিস্থিতির চরম সীমা অতিক্রম
করছেন তারা। অর্থাৎ সামনে পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছেন তিনি।

পরিস্থিতি যেন অবনতির দিকে না যায়, সেজন্য সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং
স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণের আহ্বান জানান কুমো।

তিনি জানান, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত ৩ হাজার শয্যা
প্রস্তুত করা হয়েছে।

জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির মঙ্গলবার রাতের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনাভাইরাসে
আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লাখ ৭ হাজার ছাড়িয়েছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮০ হাজার
৭৫৯।

এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৬৫ হাজারের বেশি; মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ৬
হাজারের মতো।

আক্রান্তের সংখ্যায় এখনও শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র; দেশটিতে মোট সংক্রমণ ঘটেছে ৩
লাখ ৮০ হাজার জনের মধ্যে। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে।

করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু ১০ হাজার ছাড়াল

যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক রাজ্যে করোনাভাইরাসের প্রকোপে কৃষ্ণাঙ্গরা
 

যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিপর্যকর সময় পার করা ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে এক দিনে
সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪১৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে, যা মৃতের সংখ্যাকে নিয়ে গেছে ৮ হাজার ৯১১
জনে।

মৃতের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই এখন ফ্রান্স। আক্রান্তের সংখ্যায় দেশটি
এখন পঞ্চম। ফ্রান্সে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছুঁইছুঁই করছে।

ফ্রান্সের জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান জেরমি সলোমন আশঙ্কা করছেন সামনে আরও
ভয়ানক দিন আসছে। তিনি বলেছেন, ফ্রান্স এখনও খারাপ অবস্থার চরম সীমায় এখনও পৌঁছেনি।

ফ্রান্সের হাসপাতালগুলো মৃত্যুর সংখ্যা ১০ শতাংশ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। ছবি: রয়টার্স

ফ্রান্সের হাসপাতালগুলো মৃত্যুর সংখ্যা ১০ শতাংশ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। ছবি: রয়টার্স

ফ্রান্সের মতো হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাজ্যও। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৮৬ জনের
মৃত্যু ঘটেছে। তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৫৯।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, তারা এ পর্যন্ত ২ লাখ ১৩ হাজারের
বেশি জনকে পরীক্ষা করে ৫৫ হাজার ২৪২ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করেছেন।

এদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও রয়েছেন। অবস্থার অবনতি
ঘটায় তাকে হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তবে তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানানো
হয়েছে।

জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়ালেও মৃতের সংখ্যা ২ হাজারের নিচে
রাখতে পেরেছে তারা। দেশটিতে এই পর্যন্ত ১ হাজার ৯০৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে, যা
বেলজিয়ান ও নেদারল্যান্ডসের চেয়েও কম।

ইউরোপে সবচেয়ে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাওয়া ইতালি ও স্পেনে
পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতি ঘটছে। সেখানে মৃত কিংবা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির হার
কমছে।

মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে থাকা ইতালিতে মঙ্গলবার নাগাদ ১৭ হাজার ১২৭ জনের মৃত্যু
ঘটেছে; আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৬।

ইতালির ভেনিসে মাস্ক ও গ্লভস বিতরণ করছেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা। ছবি: রয়টার্স

ইতালির ভেনিসে মাস্ক ও গ্লভস বিতরণ করছেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা। ছবি: রয়টার্স

মৃতের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্পেন আক্রান্তের সংখ্যাও দ্বিতীয়
অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে আক্রান্ত ১ লাখ ১৪ হাজার ৫১১ জনের মধ্যে ১৩ হাজার ৮৯৭
জনের মৃত্যু ঘটেছে।

ইরানে মৃতের সংখ্যা শতাধিক বেড়ে ৩ হাজার ৮৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটিতে
আক্রান্ত হয়েছে ৬২ হাজারের বেশি মানুষ।

ইরানে পরিস্থতির খানিক উন্নতি ঘটলেও অবনতি ঘটেছে তুরস্কে; দেশটিতে আক্রান্ত বেড়ে
৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে, মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৭২৫।

দক্ষিণ এশিয়ার ভারতে রোগীর সংখ্যা ৫০৮ জন বেড়ে ৪ হাজার ৭৮৯ জন হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার জন মহারাষ্ট্রের। দেশটিতে মৃতের
সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৪।

পাকিস্তানে এক দিনে দুই শতাধিক ছাড়িয়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৪ হাজার ৯ জন। পাকিস্তানে আক্রান্তের অর্ধেকই পাঞ্জাবের। দেশটিতে নতুন
কারও মৃত্যু ঘটেনি বলে সংখ্যাটি ৫২ জনই রয়েছে।

বাংলাদেশে এক দিনে এক দিনেই ৪১ জনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায়
আক্রান্তের সংখ্যা একলাফে বেড়ে ১৬৪ হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭।