ইতিমধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাবকে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি হিসেবে ‘জরুরি কাজ’ চালিয়ে নিতে বলা হয়েছে বলে ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে।
কিন্তু হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন জনসন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি অক্ষম হলে, রাবই কি অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পাবেন, তার হাতে কি প্রধানমন্ত্রীর যাবতীয় ক্ষমতাই থাকবে – এমন জিজ্ঞাসায় সয়লাব যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গন।
দেশটিতে কোনো লিখিত সংবিধান না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সরকার কীভাবে চলবে তা নিয়ে অস্পষ্টতা আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
জাতীয় কোনো দুর্যোগের সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনো নজিরও নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সংবিধানে না থাকায় এবং আগে কখনো এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হওয়ায় ‘মন্ত্রিপরিষদের ম্যানুয়াল’ অনুযায়ীই ভারপ্রাপ্ত কাউকে জরুরি কাজ চালিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হবে।
ক্ষমতাসীন দল নতুন নেতা নির্বাচন করলেই ওই ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বপ্রাপ্তের মেয়াদ শেষ হবে।
“সরকার কীভাবে কাজ করবে, তার আভাস পাওয়া যেতে পারে কেবিনেট ম্যানুয়াল দেখে। ওই ম্যানুয়ালেই প্রধানমন্ত্রীর কাজ ও ভূমিকা লেখা আছে। যেহেতু পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাব হচ্ছেন ফার্স্ট সেক্রেটারি অব স্টেট, সুতরাং তিনিই প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি কাজকর্ম দেখবেন। প্রধানমন্ত্রী যদি তার দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে রাবই দায়িত্ব নেবেন,” বলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিটার বার্নস।
ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে রাব বিচার বিভাগের ঊর্ধ্বতন বিচারক ও চার্চ অব ইংল্যান্ডের পদগুলোতে কাকে নিয়োগ দেয়া হবে, সে বিষয়ে রানির কাছে সুপারিশ পাঠানোসহ প্রধানমন্ত্রীর প্রায় সব কাজই করতে পারবেন; কিন্তু সামরিক কিংবা গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য তাকে মন্ত্রিসভার সদস্য, মন্ত্রিপরিষদের সচিব ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘ইনস্টিটিউট ফর গভর্নমেন্টের’ মতে, প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু না হলে কিংবা তিনি পদত্যাগ না করলে নতুন কাউকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়ার দরকার পড়বে না।
“প্রধানমন্ত্রী যদি মারা না যান বা পদত্যাগ না করেন, তিনিই ওই পদে আছেন বলে ধরে নিতে হবে। রাজনৈতিক দলের কোনো নেতা পদত্যাগ করলে বা একেবারে অক্ষম হয়ে পড়লে একজন অস্থায়ী নেতা নির্বাচন করতে পারে, কিন্তু যুক্তরাজ্যে অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী বলে কোন পদ নেই,” বলেছে তারা।
বিবিসি বলছে, যদি প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু ঘটে বা যদি তিনি অনেক দীর্ঘ সময়ের জন্য শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন,তখন রানি হয়তো ডোমিনিক রাবকেই একটি অন্তর্বর্তী সরকার গড়তে বলতে পারেন। এই সরকারের মেয়াদ হবে, ক্ষমতাসীন দলের নতুন নেতা নির্বাচন পর্যন্ত।
৪৬ বছর বয়সী রাব কনজারভেটিভ পার্টির প্রথমসারির নেতা না হওয়ায় জনসনের অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের মাঝে নেতৃত্বের ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়ে যেতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন।
অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী রাব ২০১০ সালে প্রথম সাংসদ হন। ব্রেক্সিটের কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত এ চেক বংশোদ্ভূত রাজনীতিকের কারাতে ব্ল্যাক বেল্টও আছে।