বাড়িতে ইবাদত করুন :ইফা
পাপ থেকে সর্বান্তকরণে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিষ্কৃতি লাভের অপার সৌভাগ্যের রাত আজ। দিবসের আলো পশ্চিমে মিলিয়ে যাবার পরই শুরু হবে কাঙ্ক্ষিত রজনি, পবিত্র শবেবরাত। হাদিস শরিফে এটাকে লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান বা মধ্য শাবানের রাত নামে অভিহিত করা হয়েছে। বর্ণিত আছে যে, রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নূরের তাজাল্লি পৃথিবীর নিকট আসমানে প্রকাশ পায়। তখন আল্লহপাক বলতে থাকেন—আছে কি কেউ ক্ষমাপ্রার্থী, যাকে আমি ক্ষমা করব? আছে কি কেউ রিজিক প্রার্থী, যাকে আমি রিজিক প্রদান করব? আছে কি কেউ বিপদগ্রস্ত, যাকে আমি বিপদমুক্ত করব? আল্লাহ তায়ালার মহান দরবার থেকে প্রদত্ত এ আহ্বান অব্যাহত থাকে ফজর অবধি।
বস্তুত আল্লাহ সুবানাহু তায়ালার নৈকট্য ও সান্নিধ্য লাভের এক দুর্লভ সুযোগ এনে দেয় লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান। মুসল্লিরা মহান আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগিতে নিমগ্ন হয়ে রাত অতিবাহিত করেন। তাত্পর্যপূর্ণ এই রাতে বিশেষ বরকত হাসিলের মানসে মুসলিম সম্প্রদায় নফল নামাজ আদায় ও কোরআন তিলাওয়াত, ইস্তেগফার, ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল ও দোয়ায় মশগুল থাকেন।
শবেবরাতকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ নামে অভিহিত করা হয়। ‘লাইলাতুল’ একটি আরবি শব্দ, আর ‘শব’ শব্দটি ফারসি। দুটি শব্দের অর্থই হলো রাত। অপরপক্ষে ‘বারাআত’ শব্দের অর্থ হলো নাজাত, নিষ্কৃতি বা মুক্তি। এ রাতে বান্দারা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে মার্জনা প্রার্থনা করে থাকেন। এ কারণে এ রাতকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বা শবেবরাত বলা হয়। এর পক্ষকাল পরেই আসবে রহমত বরকত নাজাতের মাহে রমজান। এ কারণে এটাকে বলা হয় রমজানের মুয়াজ্জিন।
উলামা মাশায়েখগণ বলেন, এশা ও ফজরের নামাজ আদায় করে সারা রাত ইবাদত ও প্রার্থনায় কাটাতে পারলে তা-ই হবে এ রাতের সঠিক মূল্যায়ন। এই রাতে শুদ্ধ মনে তওবা করার পর নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া এবং ইসলামি বিধান মেনে চলতে হবে। আর এ রাতে হালুয়া-রুটি, ফিরনি-পায়েস, খিচুড়ি, বিরিয়ানি প্রভৃতি বিতরণ বিদাআত। কারণ উত্সব নয়, কেবল প্রার্থনার রাত ‘শবেবরাত’।
এদিকে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি পৃথক বাণীতে পবিত্র শবেবরাতের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সবার প্রতি মানবকল্যাণে ও দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শবেবরাতের ইবাদত বাসায় করুন :ইফা
করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষ্যে নিজ নিজ বাসস্থানে দোয়া ও নামাজ আদায় করার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)। তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে করোনা ভাইরাসের বিস্তৃতি রোধকল্পে সরকার সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আগেই মসজিদে জুমা ও পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজে মুসল্লিদের অংশগ্রহণ সীমিত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই সংকটকালীন পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে নিজ নিজ বাসস্থানে বসে পবিত্র শবেবরাতের ইবাদত যথাযথ মর্যাদায় আদায় করার জন্য সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
ইত্তেফাক/বিএএফ