ক্যাটাগরি

মুন্সীগঞ্জে মাছের আড়তে গাদাগাদি ভিড়, দেখেনি প্রশাসন

পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জসহ সব জেলা যখন অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে সে সময়েই
বুধবার সকালেও এ মাছের আড়তে আসা লোকজনের মধ্যে এ নিয়ে কোনো বিকার দেখা যায়নি।

অনেকের মুখে মাস্ক নেই। চলাফেরায় গায়ে গা লাগে যাচ্ছে। একজন আরেক জনের
মাঝ দিয়েও ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে কেউ কেউ। মুন্সীগঞ্জের অন্তত পাঁচটি উপজেলার বেশির
ভাগ বাজারের মাছ বিক্রেতারা এখান থেকেই মাছ কেনেন।

আর মাছ বিক্রি করতে আসেন সাতক্ষীরা, ময়ময়নসিংহ, নরসিংদী, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ,
ভৈরব, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা। এমনকি ভারতের মাছও
এই আড়তে ওঠে।

এ বাজারে অন্তত ৪০টি আড়তদার রয়েছেন। আড়তটির সভাপতি আকবর হাজী এবং সাধারণ
সম্পাদক মিজানুর রহমান। তাদেরও আড়ত রয়েছে। ৪০টি আড়তে সবাই সাধারণত লাখ টাকার বেশি মাছ
বিক্রি করে থাকেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

বুধবার রাতে রিকাবীবাজার মৎস্য আড়তটির সভাপতি আকবর হাজী বলেন, “গাড়ি বন্ধ
থাকার কারণে আগের মতো মাছ আসতে পারছে না। বেচা-বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে।”

সরকারের নির্দেশনার পরও করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে গাদাগাদি ভিড়ের বিষয়ে জানতে
চাইলে এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, “আস্তে আস্তে কমে যাবে।”

মঙ্গলবার চেয়ে বুধবার ভিড় কম ছিল। বৃহস্পতিবার ভিড় আরও কমে যাবে যোগ করেন
তিনি।

এক আড়তদার জানান, সাতক্ষীরা থেকে তেলাপিয়া আসে আর ময়মনসিংহ ও নরসিংদী থেকে
কৈ, শিং ও পাবদাসহ নানান মাছ আসে এখানে।

প্রশাসন নানান জেলা অবরুদ্ধ করলেও বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছ এই আড়তে বুধবারও
এসেছে। তবে অপেক্ষাকৃত কম এসেছে এবার। যা মাছ এসেছে সবই বিক্রি হয়ে যায় বলেও আড়তদাররা
জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন ভোর ছয়টা থেকে এ মাছের বেচা-কেনা
শুরু হয়; চলে সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত। এই আড়াই ঘণ্টা ধরেই থাকে ভিড়।

এই আড়তে বুধবার ‘অন্তত আড়াই হাজার মানুষের সমাগম ঘটে’ বলে নাম প্রকাশ না
করার শর্তে জানালেন আড়তটির এক দায়িত্বশীল।

তিনি জানালেন, এদিন মাছ কিনতে মুন্সীগঞ্জ বড় বাজার, মুন্সীরহাট, টঙ্গীবাড়ি,
আলদি বাজার, দিঘিরপাড়, বালুরচর, বেতকা, আব্দুল্লাহপুর, মুক্তারপুর, ধলাগাঁও, বাঘিয়া
বাজার, পুরা বাজার, তালতলা, বালিগাঁও এমনকি মাওয়া সংলগ্ন লৌহজং থেকেও পাইকাররা এসেছেন।

ইলিয়াস হোসেন, রফিক হাজী, রুহুল হাজী ও আব্দুর রাজ্জাকের আড়তে দুই থেকে
আড়াই লাখ টাকার মাছ বিক্রি হচ্ছে বুধবার। আর মুক্তার হোসেনের আড়তে বিক্রি হয়েছে পাঁচ
লাখ টাকার মতো। মুজিবুর রহমানের আড়তে চার লাখ টাকার মত মাছ বিক্রি হয়েছে বলে জানান
তারা। 

এখানকার দাম কমের কারণেই খুচরা মাছ বিক্রেতাদের গুরুত্বটপূর্ণ আড়তে পরিণত
হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ জেলায় এর বাইরেও লৌহজং উপজেলায় মাওয়া মৎস্য আড়তও রয়েছে। সেটিও অনেক
বড় আড়ত। তবে সেখান থেকে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকায় মাছ বিক্রি বেশি হয়। এ আড়তে
বড় মাছ ও ইলিশ বেশি মেলে।

এছাড়াও টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দিঘিরপাড়ে রয়েছে আরেকটি মৎস্য আড়ত। ওখান থেকে
নানা ধরনের মাছ বিক্রি হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাওয়া ও দিঘিরপাড় মৎস্য আড়তেও এদিন
ভোরবেলায় এমনই গাদাগাদি ভিড় ছিল।

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আহাম্মেদ জানান,
মাছের আড়তটি সরকারের নির্দেশনার বাইরে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না করে  চালু রাখা হয়েছে।

“তাই এ ব্যাপারে কালই (বৃহস্পতিবার) ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”