উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমীত দেবনাথ বলেন, “বুধবার
রাত ১২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।”
ইউনিয়নগুলো হলো-জিনজিরা, আগানগর, শুভাঢ্যা, কালিন্দী এবং
শাক্তা ইউনিয়ন।
ওই পাঁচ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্ত আটজনের মধ্যে
একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও তাদের এক কিশোর সন্তান রয়েছে। আক্রান্তদের বয়স ১৬,
৩২, ৩৫, ৪০, ৫০,
৫৫, ৬৮ ও ৮০ বছর। এদের সবাইকে চিকিৎসার জন্য রাজধানীর
উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইউএনও অমীত দেবনাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোববার
থেকে বুধবার পর্যন্ত ওই ইউনিয়নগুলোর বিভিন্ন এলাকায় আটজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
হয়েছেন।
“এদের মধ্য একজন মঙ্গলবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরের
দিন তার স্ত্রী ও কিশোর ছেলের শরীরেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
“প্রতিদিনই এ উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ কারণে
সার্বিক দিক বিবেচনা করে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে এবং নতুন করে এ উপজেলায় আর
কেউ যাতে আক্রান্ত না হয় সেজন্য ওই পাঁচটি ইউনিয়ন ‘সম্পূর্ণ লকড ডাউন’ করে দেওয়া
হয়েছে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে বলে
জানান তিনি।
ইউএনও আরো বলেন, লকড ডাউন থাকাকালীন সময়ে সব
ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এই পাঁচটি ইউনিয়ন থেকে কেউ বাইরে যেতে
বা ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না।
কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর দোকান সকাল ১০টার
পর বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র ওষুধের
দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।
“খাদ্য সামগ্রী ওয়ার্ড কমিটির মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। এমনকি ওয়ার্ড
কমিটির সদস্যরাও নির্ধারিত সীমানার বাইরে আসতে পারবে না।”
তবে জরুরি সেবা আওতামুক্ত থাকবে। জরুরি
সেবার জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বারকে অবহিত করতে হবে।
এছাড়াও নামাজের জন্য ইসলামিক
ফাউন্ডেশনের জারিকৃত নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। নৌ-ঘাট
ও ওই ইউনিয়নগুলোর সংশ্লিষ্ট সব কল-কারখানা, মিল-ফ্যাক্টরি
সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। যদি কেউ এর ব্যতিক্রম করে তবে তার বিরুদ্ধে
আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও অমীত দেবনাথ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর মোবারক
হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আক্রান্তদের সবাইকে আপাতত চিকিৎসার জন্য
রাজধানীর উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আক্রান্তদের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা
করে তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আক্রান্তদের পুরো এলাকা লকড
ডাউন করে দেওয়া হয়েছে। আক্রান্তদের পরিবারসহ আশেপাশের প্রায় আড়াইশো থেকে তিন
শতাধিক পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিন থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো
চিহ্নিত করে লাল
নিশান ও হোম
কোয়ারেন্টিনের ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডা. মোবারক বলেন, “আক্রান্তদের
এলাকাগুলোয় বসবাসরত মানুষের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়গুলো আমরা দেখব আর হোম
কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে সব ধরণের সহযোগিতার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গুলো উপজেলা
প্রশাসন দেখবে।”