কাজলের ছেলে মনোরম পলক বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “আসুন এই
অসুস্থ নিষ্ঠুর সময়ে দূরে
থেকেই পাশে দাঁড়াই। নাই হয়ে যাওয়া একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ, একটি ক্যামেরার
হাত, একজন নিয়ম ভাঙ্গা ফটো সাংবাদিকের খোঁজে মিলিত হই অনলাইন মানববন্ধনে। সমস্বরে
কাজলের খোঁজ করি। জানান দেই, আইনশৃঙ্খলা
বাহিনী ও সরকারকে দ্রুত শফিকুল ইসলামের কাজলের সন্ধান দিতে হবে।”
ফেইসবুকে এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে যার যার প্রোফাইল থেকে বৃহস্পতিবার থেকে
১৬ এপ্রিল
পর্যন্ত একটি সাদা কাগজে #whereiskajol লিখে পোস্ট করার অনুরোধ করেছেন
মনোরম পলক।
কর্মসূচিতে অংশ নিতে ইচ্ছুকদের জন্য ফেইসবুক পেইজ লিংক
(https://www.facebook.com/whereiskajol/) এবং ইভেন্ট লিংক
(https://www.facebook.com/events/252714179098663/) বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছেন তিনি।
এছাড়া ১৬ এপ্রিল সারাদিন শফিকুল ইসলাম
কাজলের তোলা ছবির
অনলাইন প্রদর্শনী এবং একইদিন
সরাসরি নিজে ফেইসবুক লাইভে থাকার কথাও জানান মনোরম পালক।
গত ১০ মার্চ শফিকুল ইসলাম কাজল তার বকশিবাজারের বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে
তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি তার পরিবার।
পরদিন কাজলের স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী চকবাজার থানায় গিয়ে একটি জিডি করেন।
১৮ মার্চ কাজলের সন্ধান চেয়ে চেয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে
একটি অপহরণ মামলা করেন মনোরম পলক।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক ও
রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে লেখালেখির কারণে অজ্ঞাতনামা কেউ তাকে অপহরণ করেছে।
তার নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য
সাইফুজ্জামান শিখর শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন,
তাতে ফেইসবুক ব্যবহারকারী আসামিদের তালিকায় প্রথমেই কাজলের নামও রয়েছে।
শিখরের দায়ের করা মামলায় মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী এবং
সাংবাদিক আল আমিনের বিরুদ্ধে একই আইনে অভিযোগ আনা হয়।
যুব মহিলা লীগের নরসিংদীর শাখার বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর
পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেল কেন্দ্রিক মানবজমিনে সংবাদ প্রকাশ এবং সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য হওয়ায় শিখর এ মামলা দায়ের করেন।
কাজলের সন্ধান না পেয়ে পরিবারের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে তার ছেলে বলেন,
“আমরা একটা অসহ্য অসহায় রকম সময় পার করছি। বাবাকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তার সাথে করোনা আতঙ্কের ছায়াও আমাদের ঘরে। দেশবাসী
প্রত্যেকে করোনার এই মহামারী বিপদে অত্যন্ত স্বাস্থ্য ও জীবন-জীবিকার ঝুঁকিতে আছি।”
একসময় দৈনিক সমকাল ও বণিক বার্তায় ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা কাজল এখন
‘পক্ষকাল’ নামের একটি পাক্ষিক পত্রিকা সম্পাদনা করছেন।
এক সময়ের জাসদ ছাত্রলীগ নেতা কাজলের সন্ধান দাবিতে তার পুরনো রাজনৈতিক
সহকর্মী, স্বজন ও সাংবাদিকদের আন্দোলনের মধ্যে সম্প্রতি কাজলের একটি ভিডিও ফুটেজ
প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
ওই ফুটেজে কাজলকে একটি জায়গায় রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল রেখে পাশের কোথাও
যেতে দেখা যায়। বেশ কিছুক্ষণ ফিরে এসে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান তিনি। এর মধ্যে তার
ওই মোটরসাইকেল ঘিরে কয়েকজনকে তৎপরতা চালাতে দেখা যায়।