রোববার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারত ও বাংলাদেশের অবস্থানের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
নিপীড়নের মুখে পালিয়ে এসে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে শরণার্থী জীবন কাটাচ্ছে। তাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করলেও এখনও প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি।
রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরে যাওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি করতে মিয়ানমারকে চাপ দিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সস্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে ভারত ও চীনের ভূমিকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
দোরাইস্বামী বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। এটা প্রশংসার দাবি রাখে। রোহিঙ্গাদের এখানে রাখার জন্য যে সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে তা চমৎকার।
“এটা একদম স্পষ্ট, আমরা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসন চাই। সবক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা থাকবে।”
রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত যাওয়া বাংলাদেশের সমাজ ও অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মেনে নেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকরা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত হওয়ার বিষয় নিয়েও দোরাইস্বামীকে প্রশ্ন করেন।
তিনি বলেন, “সীমান্তে অবৈধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার ৯৫ শতাংশ ঘটে ভারতের সীমান্ত এলাকায়। ৮৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে রাত ১০টার পরে। এসময় অবৈধ অনুপ্রবেশও ঘটে।”
এসব ঘটনা বন্ধে সীমান্তে বৈধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন ভারতের হাই কমিশনার।
এদিন ঢাকায় বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির প্রধান মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামও বলেন, সীমান্তের জনগণকে সচেতন এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারলে সীমান্ত হত্যা কমবে বলে মনে করেন তিনি।
সীমান্তবাসীর সচ্ছলতা কমাতে পারে সীমান্ত হত্যা: বিজিবি মহাপরিচালক
বিক্রম দোরাইস্বামী প্রেস ক্লাবে তার বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের ‘বাণিজ্যিক রাজধানী’ চট্টগ্রামের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম চারশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব বাণিজ্যের গেটওয়ে। এর সোনালী অতীত রয়েছে। ভবিষ্যতের হিসেবে অর্থনৈতিক দিক থেকে চট্টগ্রামের গুরুত্ব আরও বেশি।”
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী ও ক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সালাহ উদ্দিন মো. রেজা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।