ক্যাটাগরি

পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব নেপাল মন্ত্রিসভার

রোববার সকালে মন্ত্রিসভার এক জরুরি বৈঠকে তিনি এ সুপারিশ করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ওলির এক সহযোগী জানিয়েছেন, নিজ দলের সমর্থন হারানোর পর সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন করে জনসমর্থন চাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

নেপালের সাবেক মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গে গড়া জোটের নেতৃত্ব দিয়ে ২০১৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক জয় পেয়েছিলেন ওলী। কিন্তু নিজ দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিকে এড়িয়ে অন্তরঙ্গ একটি উপদলকে নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।  

ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির এক নেতা বলেছেন, দলের ভেতর সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন হারানো ওলি এখন দেশকে নতুন নির্বাচনের পথে ঠেলে দিতে চাইছেন।

“প্রধানমন্ত্রী আমাদের দলের সম্পাদকমণ্ডলী, কেন্দ্রীয় কমিটি ও সংসদীয় দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন হারিয়েছেন। এখন দলের সঙ্গে কোনো ধরনের আপস মিটমাট না করে তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে চাইছেন,” বলেছেন নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিষ্ণু রিজল।

এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ওলির কোনো মন্তব্য না পাওয়া গেলেও তার উপদেষ্টা রাজন ভট্টরাই বলেছেন, দলের ভেতর চাপে পড়েই প্রধানমন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ওলিকে দলের প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতে বলেছিল বলেও জানান তিনি।

“তাই তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গণতন্ত্রে এটাই সবচেয়ে সেরা উপায়,” বলেছেন তিনি।

তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে থাকা নেপালে করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে এমনিতেই সমালোচনায় থাকা ওলিকে তার দল হয় প্রধানমন্ত্রীত্ব নয় দলের শীর্ষ পদ ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

ক্ষমতাসীন দলের ভেতরকার টানাপোড়েন নিয়ে ওলি শনিবার কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের পাশাপাশি নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারির সঙ্গেও বৈঠক করেন বলে জানিয়েছে কাঠমান্ডু পোস্ট।

নেপাল সরকারের এক মন্ত্রী জানান, রোববার সকালে ডাকা জরুরি বৈঠকে ওলি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সুপারিশের প্রস্তাব করলে ‘কেউই তাতে আপত্তি জানাননি’।

২০২২ সালে নেপালের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। মন্ত্রিসভা সুপারিশ করায় প্রেসিডেন্ট ভান্ডারির হাতে এখন পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন ডাকার সুযোগ সৃষ্টি হল।

কিন্তু নেপালের সংবিধানে মন্ত্রিসভার সুপারিশের ভিত্তিতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া বিষয়টি না থাকায় বিরোধিরা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে বলেও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

“পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি অসাংবিধানিক। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত,” কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মাধব কুমার নেপালের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি এমনটি বলেছেন বলে জানিয়েছে একটি সংবাদ সংস্থা।

ওলি মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিরোধীদল নেপালি কংগ্রেসের সদস্যরাও।

“মন্ত্রিসভার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক,” টুইটারে এমনটাই বলেছেন কংগ্রেসের আইনপ্রণেতা গগন থাপা।