এ জরিপের জন্য ডিএসসিসির অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হায়দর আলী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক এবং প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিনকে প্রধান করে তিনটি দল গঠন করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং বিস্ফোরক পরিদপ্তরসহ সরকারের আরও তিনটি সংস্থার প্রতিনিধিরাও রয়েছেন এসব দলে।
রোববার থেকেই জরিপের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে রাসেল সাবরিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুরান ঢাকা থেকে প্লাস্টিক দ্রব্য ও রাসায়নিকের কারখানা ও গুদাম স্থানান্তরের যে প্রক্রিয়া চলছে, তার অংশ হিসেবেই এ তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
“স্থানান্তরের জন্য আগে এগুলোর প্রকৃত অবস্থান চিহ্নিত করা জরুরি। আমরা দেখতে চাচ্ছি, মোট কতগুলো কারখানা আছে, লোকেশনটা কোথায়। জরিপ শেষে আমরা কেবিনেটকে তা জানাব। জরিপকাজ শেষ হতে হয়ত আরও ১৫-২০দিন লাগবে।”
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জরিপ দল ডিএসসিসি এলাকায় বিস্ফোরক ব্যবসায় জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীর সংখ্যা, লাইসেন্সের সংখ্যা, গোডাউনের ভৌত অবস্থা এবং সাধারণভাবে কোন ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবসা বেশি- তা খুঁজে বের করবে। জরিপে পাওয়া তথ্য প্রতিবেদন আকারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেওয়া হবে।
২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ আগুনে৭১ জনের প্রাণহানির পর ঢাকার জনাকীর্ণ ওই এলাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম ও প্লাস্টিক কারখানা সরানোর তৎপরতা শুরু হয়।
শুরুতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কথা বলা হলেও পরে তদন্তে জানা যায়, চুড়িহাট্টার আগুনের উৎপত্তি হয়েছিল একটি ভবনে থাকা রাসায়নিক ও প্রসাধন সামগ্রীর গুদাম থেকে।
পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম ও প্লাস্টিক কারখানা স্থানান্তর এবং বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্যের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় গত ১৮ নভেম্বর একটি মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করে সরকার।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে কমিটির সদস্য করা হয়।
সে সময় ন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়, কমিটি পুরান ঢাকায় বিদ্যমান কেমিকেল গোডাউন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সাময়িক/অস্থায়ীভাবে সীমিত সময়ের জন্য ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। সব বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্যের সঠিক নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে।
বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবসার লাইসেন্স প্রদান, পরিবহন, বিপণন, পরিদর্শন ইত্যাদি কার্যক্রমকে একটি দপ্তরের (অথরিটি) অধীনে এনে ‘ওয়ানস্টপ’ সার্ভিসের মতো একটি নতুন ব্যবস্থাপনায় আনতে বিষয়টি বিবেচনা করে সুপারিশ দেবে এই কমিটি।
ওই মন্ত্রিসভা কমিটির কাজের অংশ হিসেবেই দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এই জরিপ কাজ শুরু হয়েছে। বিস্ফোরক ও রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলোর বেশিরভাগের অবস্থান ডিএসসিসির অঞ্চল-৪ এ হওয়ায় সেখান কেই জরিপের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অঞ্চল-৩ ও অঞ্চল-৫ এও জরিপ চালানো হবে বলে জানিয়েছে ডিএসসিসি।
পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক কারখানা ও গুদাম এবং প্লাস্টিক কারখানা স্থানান্তরে তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে ঢাকার শ্যামপুর ও গাজীপুরের টঙ্গীতে অস্থায়ী গোডাউন নির্মাণে দুটি প্রকল্প এবং ২০২২ সালের জুনের মধ্যে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বিসিক কেমিকেল পল্লী স্থাপনের কথা রয়েছে।