স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ভাবনা ছিল সকল মানুষকে নিয়ে ভালো থাকা। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ফলশ্রুতিতে সারা দেশে উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে এদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে।
শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে মাদারীপুরের শিবচরে ৫০০ আসন বিশিষ্ট নুর-ই-আলম চৌধুরী অডিটোরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হলের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, সারা দেশে ১ শত ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হবে। এদেশ কৃষিতে সমৃদ্ধ। কিন্তু এদেশের জনসংখ্যা প্রচুর। এত মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রচুর শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে হবে। পদ্মাসেতুকে ঘিরে সারা দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।
অসংখ্য শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হবে। শিগগিরই চট্টগ্রামে বিশাল এক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে, যেখানে ত্রিশ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এর মধ্য দিয়ে দেশে ১ পারসেন্ট জিডিপি বেড়ে যাবে। ফলে দেশে দারিদ্রতার হার কমে আসবে। আজ সকাল থেকে শিবচর উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজ ঘুরে ঘুরে দেখলাম। দেখে আমি মুগ্ধ হলাম। যেন শিবচরকে চিফ হুইপ তার মনে মতো করে সাজিয়েছেন।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, আইসিটি শিক্ষার প্রসারে সরকার ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। আইসিটি শিক্ষায় দক্ষতার মাধ্যমে এ দেশের তরুণ সমাজ ঘরে বসে উপার্জন করতে পারবে। এছাড়াও নদী খনন করে পানি ধারণের গভীরতা বজায় রাখাসহ জলবায়ুজনিত ক্ষতিরোধে ৩৮টি প্রকল্প ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও মাদারীপুর-১(শিবচর) আসনের ছয় বারের সফল সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী।
নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি তার বক্তব্যে বলেন, পদ্মার পাড়ে শিবচর হয়ে উঠবে বসবাসের এক আধুনিক শহর। আমরা এক সময় ভাবতেও পারিনি শিবচরে এত বড় বড় প্রকল্প করব! আজকে শিবচরে ২২ শত কোটি টাকা ব্যয়ে তাঁতপল্লী হচ্ছে। অলিম্পিক ভিলেজের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।অনেক বড় বড় মেগা প্রকল্প এখানে আসছে। এর মধ্য দিয়ে শিবচর মানুষের জন্য বসবাসের আধুনিক শহর গড়ে উঠবে।
যেখানে আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা, খেলাধুলার ব্যবস্থাসহ বসবাসের আধুনিক সকল ব্যবস্থা এখানে আমরা করব। তিনি আরো বলেন,এক সময় প্রধানমন্ত্রী শিবচর পৌর এলাকায় পানির মধ্যে খালি পায়ে হেঁটেছেন।এই অবস্থা ছিল শিবচরে। তার জন্যই আজ শিবচরে উন্নয়ন হয়েছে। আমরা শিবচরকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি নিয়ে ঢাকার পাশে এমনি এক এলাকা গড়তে চাই যেখানে কোনো সন্ত্রাস থাকবে না, আমরা এখানকার ছেলেমেয়েদের আধুনিক শিক্ষা দিতে পারবো এমনি এক এলাকা গড়ে তুলবো।
তিনি বলেন,শিবচরে সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি রেলপথের যোগাযোগও হচ্ছে। ভৌগোলিক দিক দিয়ে শিবচর এমনি এক জায়গা যেখানে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নৌপথ, সড়কপথ ও রেলপথের সঙ্গে অল্প সময়ের মধ্যে আমরা সংযুক্ত হতে যাচ্ছি। আগামী দিনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আকাশ পথের জন্যও যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, সেটাও শিবচরের মাটিতে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেটা হলে শিবচর আকাশ পথের যোগাযোগেরও যুক্ত হতে পারবে।
শিবচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ মোল্লার সভাপতিত্বে ও শিবচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম রকিবুল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশিদ খান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান, মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন,মাদারীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরী, মাদারীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মজিবুর রহমান সিকদার, মাদারীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার, পৌর মেয়র আওলাদ হোসেন খান, শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) মো. আবির হোসেন, এলজিইডির শিবচর উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইকবাল হোসেন, শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. মিয়াজ হোসেন, শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. সেলিম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন তোতা খান, সাধারণ সম্পাদক বাবু শংকর চন্দ্র ঘোষ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইলিয়াছ পাশা, সাধারণ সম্পাদক খায়রুজ্জামান খানসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মন্ত্রী এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে, মুজিব বাহিনীর কোষাধ্যক্ষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরীর (দাদা ভাই) কবর জিয়ারত, মাদারীপুর জেলা পরিষদের অর্থায়নে শিবচর পৌর এলাকায় রেস্ট হাউস নির্মাণের জায়গা পরিদর্শন ও শিবচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ইত্তেফাক/এএএম