নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে একক নামে তিনটি প্রবাসী বন্ডে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ এক কোটি টাকার বেশি হতে পারবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারির পর সোমবার এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট আইনে যাই
বলা থাকুক, ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের বিপরীতে সমন্বিত বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা
হবে এক কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। সরকারের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বিদেশে অবস্থান করেন, এমন যে কোনো বাংলাদেশি চাইলেই এই তিন ধরনের প্রবাসী বন্ডে বিনিয়োগ করে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা নিতে পারেন।
১৯৮৮ সালে চালু হওয়া পাঁচ বছর মেয়াদি ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ২০০২ সালে চালু হওয়া তিন বছর মেয়াদি ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগ করে এ সুবিধা পাওয়া যায়।
এতোদিন প্রবাসী বন্ডে খুব বেশি বিনিয়োগ হত না। সে কারণে বিনিয়োগের সুনির্দিষ্ট কোনো সীমাও দরকার হয়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এ তিন বন্ডে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।
৩ ডিসেম্বর থেকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও নতুন সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে একক নামে ৫০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন না কেউ। যৌথ নামে এক কোটি টাকার বেশি কেনা যাবে না।
এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জারি করা
প্রজ্ঞাপনটিও সোমবার সার্কুলার আকারে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সেখানে বলা হয়েছে, সরকার পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র এবং পরিবার সঞ্চয়পত্র তিনটি স্কিমের বিপরীতে সমন্বিত বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অথবা যৌথ নামে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এ নির্দেশনাও ৩ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।
এতদিন আলাদা আলাদা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের একটি সীমা থাকলেও একক নামে একজন সবমিলিয়ে মোট কত টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন তার কোনো ঊর্ধ্বসীমা ছিল না। যৌথ নামে সমন্বিত বিনিয়োগেরও কোনো ঊর্ধ্বসীমা ছিল না।
প্রবাসী বন্ডে বিনিয়োগে প্রণোদনা নেই
গত ১ জুলাই থেকে জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় সারাদেশে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বা ডাকঘর যেখান থেকেই সঞ্চয়পত্র কেনা হোক না কেন, সব তথ্য জমা হচ্ছে নির্দিষ্ট একটি ডেটাবেইজে। এক লাখ টাকার বেশি হলে ক্রেতাকে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) দিতে হচ্ছে। এছাড়া সবধরনের লেনদেন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও সঞ্চয়পত্রের বিক্রি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে; চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ১৫ হাজার ৬৪২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের মোট ২২০ কোটি ১৫ লাখ টাকার প্রবাসী বন্ড বিক্রি হয়েছে।
এর মধ্যে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে
সবচেয়ে বেশি, ১৬৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এছাড়া ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডে ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে ৪৬ কোটি ১১ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে।