অথচ, গত কয়েক মাসে প্রতিবেশীদেশের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দিশাহীন অবস্থা দেখলেও নিজেদের ভালোভাবেই সামলে রেখেছিল থাইল্যান্ড।
গত বছর ডিসেম্বরে উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর চীনের বাইরে থাইল্যান্ডেই প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছিল। কিন্তু সরকারের তড়িৎ ব্যবস্থায় এ রোগ দেশটিতে সেভাবে থাবা বিস্তার করতে পারেনি। এবারের প্রাদুর্ভাবের আগে থাইল্যান্ডে চার হাজারের মত রোগী শনাক্ত হয়। মারা যায় মাত্র ৬০ জন।
এবারের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে রাজধানী ব্যাংককের কাছে উপকূলীয় প্রদেশ সামুত সাখনে। সেখানকার সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকেই ভাইরাস ছড়িয়েছে। ওই বাজারের বেশিরভাগই অভিবাসী শ্রমিক, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের নাগরিক।
ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পুরো প্রদেশ লকডাউন ঘোষণার পাশপাশি সব শ্রমিককে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যেভাবে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে:
গত বৃহস্পতিবার ৬৭ বছর বয়সের একজন থাই নারী মাছ বিক্রেতার প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। তার পরপরই থাইল্যান্ডের কোটি কোটি ডলারের সামুদ্রিক খাবারের বাজারের প্রাণকেন্দ্র মাহাচাই মার্কেটে দ্রুত গণহারে ভাইরাস পরীক্ষা করা শুরু হয়।
শুক্রবার আরও চারজন রোগী শনাক্ত হয়। রোববারের মধ্যে যে সংখ্যা এক লাফে ৬৮৯ জনে গিয়ে পৌঁছায়। দেশটির গণস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আক্রান্তদের বেশিরভাগ মিয়ানমার থেকে সেখানে যাওয়া শ্রমিক। যারা ওই বাজারের আশেপাশেই বসবাস করে।
প্রথম যে নারীর রোগ শনাক্ত হয় তিনি কখনও দেশের বাইরে যাননি। ফলে কিভাবে তিনি আক্রান্ত হলেন তার খোঁজে প্রশাসন থেকে জোর তল্লাশি শুরু হয়েছে।
মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ‘‘শ্রমিকদের ওই এলাকায় আটকে রাখা হয়েছে এবং তাদের বাইরে ঘোরাফেরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তাদেরকে সরকার থেকে খাবার ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
শ্রমিকরা লাইন ধরে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, এখন পর্যন্ত যতজন শনাক্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশের দেহেই রোগের কোনো ধরনের উপসর্গ নেই।
অথচ সোমবারও ৩৬০ জন অভিবাসী শ্রমিক নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন। যা দেশটিতে দৈনিক শনাক্তের নতুন রেকর্ড। থাইল্যান্ডে এর আগে একদিনে এত রোগী শনাক্ত হয়নি।
আগামী ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সামুত সাখনে লকডাউন এবং রাতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানকার এবং প্রতিবেশী প্রদেশের ৪০ হাজারের বেশি মানুষের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে।