সোমবার
সংসদ সচিবালয়ের সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে দক্ষিণ প্লাজার
পাশে জড়ো হন। এরপর মিছিল করে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে গিয়ে তারা মানবন্ধন করেন।
বাংলাদেশ
সংসদ সচিবালয় কর্মকর্তা/কর্মাচারী ফোরাম এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

সংসদ সচবিালয়ের
সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান মানবন্ধনে বলেন, “দেশ যখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মুজিববর্ষ
পালন করছে, তখন উৎকট কিছু বিষয় জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে
বঙ্গবন্ধুকে অবমানা করছে। বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা মানে রাষ্ট্রকে অবমাননা। একটি কুচক্রী
মহল জনগণকে বিভ্রান্ত করে ফায়দা হাসিল করতে চায়।”
মুজিববর্ষে
ঢাকার ধোলাইড়পাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলে তার বিরোধিতা শুরু
করেন কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠনের জোট হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
হেফাজতের
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক ভাস্কর্য তৈরি করা হলে তা ‘বুড়িগঙ্গায় ফেলার’ হুমকি
দেন। এরপর চট্টগ্রামে এক ধর্মীয় সভায় হেফাজত আমির জুনাইদ বাবুনগরী যে কারও ভাস্কর্য
তৈরি করা হলে ‘টেনেহিঁচড়ে’ ভেঙে ফেলার হুমকি দেন।

এর প্রতিবাদে
রাস্তায় নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন, লেখক-অধ্যাপক,
শিল্পী-সাহিত্যিকরা।
এর মধ্যেই
কুষ্টিয়া শহরে বঙ্গবন্ধুর একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্যে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে স্থানীয়
একটি মাদ্রাসার দুই ছাত্র এবং দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সংসদ সচিবালয়ের
অতিরিক্ত সচিব নুরুজ্জামান মানববন্ধনে বলেন, “১৯৭৫ সালে একবার ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে
হত্যা করেছে, এখন দেশ যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে, তখন
আবার ষড়যন্ত্র করছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
“আমরা
চুপ করে থাকব না। এদের অবশ্যই রুখে দিতে হবে। শুধু আইন দিয়ে নয়, এই কুচক্রী ষড়যন্ত্রকারীদের
রুখতে আমরা রাস্তায় নেমেছি। বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা মানে দেশকে অবমাননা, মুক্তিযুদ্ধকে
অবমাননা। আমরা সরকারি কর্মচারী, কিন্তু আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে
আমাদের অবস্থান।”
সংসদ সচিবালয়
ছাড়াও গণপূর্ত বিভাগ, সোনালী ব্যাংক (সংসদ সচিবালয় শাখা), নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত
পুলিশ, মেডিকেল সেন্টারে কর্মরতরাও মানববন্ধনে অংশ নেন।

সংসদ সচিবালয়ের
পরিচালক (গণসংযোগ) তারিক মাহমুদ মানববন্ধনে বলেন, “যারা ইসলামের নামে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের
চেতনায় আঘাত করতে চায়, তাদের ধিক্কার জানাই। তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যই শুধু ভাঙেনি,
তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত করেছে। হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, নবীর ইসলামের নামে
ভাস্কর্য অবমাননা করবেন না। তোমরা তোমাদের ইসলাম নিয়ে মাদ্রাসায় থাক। আমরাও মুসলমান।
বাড়িতে কোরআন পড়ি। ইসলাম চর্চা করি। তোমাদের মূর্খতা নিয়ে মাদ্রাসায় বসে থাক।”
অন্যদের
মধ্যে সচিবালয় কর্মকর্তা/কর্মাচারী ফোরামের সভাপতি কিবরিয়া মজুমদার, সহকারী পরিচালক
তানজিনা তানীন, কম্পিউটার অপরাটের আবুল খায়ের উজ্জ্বল মানবন্ধনে বক্তব্য দেন।