নিয়ম এড়িয়ে সরাসরি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির চেষ্টা করা বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের নিরীক্ষা ও পুনর্মূল্যায়নের কাজ করে দেওয়া আর্টিজান চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ও মাহফেল হক অ্যান্ড কোং এর নামও রয়েছে বাদ পড়া ফার্মের তালিকায়।
এই ৩৬টি ফার্ম এখন থেকে আর কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কোনো অডিট বা নিরীক্ষা করতে পারবে না। এর ফলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অডিট করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকায় যোগ্য অডিট ফার্ম থাকল ৪১টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ‘অযোগ্য বিবেচনা করে’ ওই ৩৬টি অডিট ফার্মকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
যে ৪১টি অডিট ফার্ম যোগ্য বিবেচিত হয়েছে, তাদের একটি তালিকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। এরপর তা বাইরের কোনো নিরীক্ষক ফার্মকে দিয়ে নিরীক্ষা করাতে হয়। সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগ্য অডিট ফার্মের মধ্যে কে একটিকে সেই নিরীক্ষার দায়িত্ব দিতে হয়।
তালিকাভুক্ত অডিট ফার্ম ব্যাংকের বার্ষিক হিসাব বিবরণী নিরীক্ষার পাশাপাশি নগদ সহায়তা ছাড়ের অনাপত্তিপত্র দিয়ে থাকে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সব ধরনের নিয়ম পরিপালন করে আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে কিনা বা নগদ সহায়তা ছাড় করছে কিনা, তা দেখার দায়িত্ব এসব অডিট ফার্মের।
সেজন্য এসব অডিট ফার্ম একটি ফি পায়। কোনো অডিট ফার্ম ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) তালিকাভুক্ত মোট ১৭৩ অডিট ফার্মের মধ্যে ৭৫টি বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১৭ সালের যোগ্য অডিট ফার্মের তালিকায় ছিল। অনিয়মে জড়িত থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগে কিছু ফার্ম এবারের নতুন তালিকায় স্থান পায়নি।
এর মধ্যে ভুয়া রপ্তানি বিলের বিপরীতে নগদ সহায়তা ছাড়ে অনাপত্তি দেওয়ায় সাইফুল শামসুল আলম অ্যান্ড কোং এবং আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী নামের দুটি অডিট ফার্মকে নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাদ পড়া বাকি অডিট ফার্মগুলো হল- এস এফ আহমেদ অ্যান্ড কোং, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, শফিক বসাক অ্যান্ড কোং, আহমদ অ্যান্ড আখতার, আহমেদ মাসুক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং, পিনাকী অ্যান্ড কোং, আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোং, মালেক সিদ্দিকী ওয়ালী, সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং, এ মতিন অ্যান্ড কোং, কে এম আলম অ্যান্ড কোং, আর্টিজান, এ হক অ্যান্ড কোং, ফেমস অ্যান্ড আর, হুদা হোসাইন অ্যান্ড কোং, রহমান আনিছ অ্যান্ড কোং, এ বি সাহা অ্যান্ড কোং, ইসলাম জাহিদ অ্যান্ড কোং, মিজান ইসলাম অ্যান্ড কোং।
এছাড়া খান আইয়ুব, শফিক মিজান রহমান অগাস্টিন, হাবিব সরোয়ার ভূঁইয়া অ্যান্ড কোং, রহমান কাসেম অ্যান্ড কোং, জে আর চৌধুরী অ্যান্ড কোং, মোহাম্মাদ আতা করিম অ্যান্ড কোং, আখতার আমির অ্যান্ড কোং, নূরুল আজিম অ্যান্ড কোং, দেওয়ান নজরুল ইসলাম অ্যান্ড কোং, আহসান জাকির অ্যান্ড কোং, আশরাফ উদ্দিন অ্যান্ড কোং, তখতিয়ার হুমায়ন অ্যান্ড কোং, আশরাফ উল হক নবী অ্যান্ড কোং এবং রহমান মুস্তাফিজ হক অ্যান্ড কোং বাদ পড়েছে যোগ্য অডিট ফার্মের তালিকা থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংক যোগ্য যে ৪১টি অডিট ফার্মের তালিকা প্রকাশ করেছে সেখানে নতুন যুক্ত হয়েছে আহসান মঞ্জুর অ্যান্ড কোং এবং চৌধুরী ভট্টাচার্য অ্যান্ড কোং। ২০১৭ সালের তালিকায় এ দুটি কোম্পানি ছিল না।