ক্যাটাগরি

গুচ্ছ পদ্ধতি: পরীক্ষায় মিলবে শুধু নম্বর, ভর্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর

গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান একথা জানিয়েছেন।

এই ভর্তি পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে এলে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

অধ্যাপক মীজানুর রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে কাউকে ভর্তি করানো হবে না।

“আমরা রেজাল্ট দিয়ে দেব ১০০ এর মধ্যে কে কত পাইছে৷ কেউ ফেইল করবে না, পাসও করবে না। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের নিজস্ব শর্ত অনুযায়ী ভর্তি করাবে।”

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে কয়েক বছর ধরেই সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে সমন্বিত পরীক্ষার চেষ্টা করছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি।

কিন্তু বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আপত্তিতে তা সম্ভব না হওয়ায় গত বছর ইউজিসি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতিতে নেয়।

এবার মহামারীর কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি তোড়জোর চালালেও বড় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এরই মধ্যে গত ১ ডিসেম্বর ১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসে।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের কমিটি গত শনিবার প্রথম সভা করে। ওই সভায় গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে একযোগে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে।

এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান- তিনটি গুচ্ছে ১০০ নম্বরের সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে।

অধ্যাপক মীজানুর বলেন, “একই স্ট্যান্ডার্ডের হলেও প্রশ্ন হবে বিভিন্ন সেটে। উচ্চ মাধ্যমিকের কমন সাবজেক্টগুলো থেকেই প্রশ্ন হবে।”

এক্ষেত্রে বিজ্ঞান শাখায় বাংলায় ১০, ইংরেজিতে ১০, পদার্থ বিজ্ঞানে ২০, রসায়নে ২০ এবং গণিত/জীববিজ্ঞান/আইসিটি থেকে যে কোনো দুটি বিষয়ে ২০ করে মোট ৪০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।

বাণিজ্য শাখায় বাংলায় ১৩, ইংরেজিতে ১২, হিসাববিজ্ঞানে ২৫, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনায় ২৫ এবং আইসিটিতে ২৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে।

মানবিক শাখায় বাংলায় ৪০, ইংরেজিতে ৩৫ এবং আইসিটিতে ২৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে।

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করতে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জিপিএ ৭, বাণিজ্যের শিক্ষার্থীদের জিপিএ সাড়ে ৬ এবং মানবিকের শিক্ষার্থীদের জিপিএ ৬ থাকতে হবে।

তবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৩ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ গ্রুপে পরীক্ষা দিয়েই বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ পাবে।

দ্বিতীয়বার যারা ভর্তি পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক তারা এ পদ্ধতিতে আবেদন করার সুযোগ পাবে কি না- জানতে চাইলে মীজানুর রহমান বলেন, “২০১৯ ও ২০ সালে যারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে, তারা আবেদন করতে পারবে। কিন্তু এদেরকে নেবে কি না, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সিদ্ধান্ত নেবে। যেমন আমরা (জগন্নাথ) শুধু এবারের শিক্ষার্থীদের নেব।

“পরীক্ষা দিবে সবাই। সবাই একটা মার্কস পাবে৷ পরে যে সেখানে সুযোগ পাবে সেখানে ভর্তি হতে পারবে।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির মানদণ্ডের বিষয়ে উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, “মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলের বিষয়ে একটা স্ট্যান্ডা্র্ড মেইনটেইন করব আমরা। একটা নির্দিষ্ট পয়েন্ট থাকবে আবেদন যোগ্যতার।”

মহামারীর কারণে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এবার জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল মূল্যায়ন করা হবে। এতে ১৩ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর সবাই পাস করবেন; যাদের ফল ডিসেম্বরেই প্রকাশের কথা রয়েছে।

এই শিক্ষার্থীরা ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ হাজার আসনে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির যুদ্ধে নামবেন।