তার
প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে রোববার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘ইন মেমোরিয়াম স্যার
ফজলে হাসান আবেদ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল স্মরণ সভা আয়োজন করা হয়।
সভায়
স্যার ফজলে হাসান আবেদের দীর্ঘদিনের বন্ধু অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, “ক্ষমতায়নের
মাধ্যম মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে সমর্থ হয়েছেন স্যার ফজলে। মানুষকে
আত্মনির্ভরশীল করে তোলার জন্য সারা জীবন কাজ করে গেছেন। সব সময় প্রচার বিমুখ
থেকেছেন, তার অসংখ্য ভালো কাজের মাধ্যমেই তিনি সবার মাঝে বেঁচে থাকবেন।”
অনুষ্ঠানে
স্বাগত বক্তব্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে ফজল হাসান আবেদের অবদান প্রসঙ্গে ব্র্যাক
ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ভিনসেন্ট চ্যাং বলেন, “ব্র্যাক
ইউনিভার্সিটিকে তিনি বিশ্বমানের একটি প্রতিষ্ঠান ও সৃজনশীল জ্ঞানচর্চার
কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। স্যার ফজলের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিকে বিশ্বমানের গর্বিত একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”
ব্র্যাকের
চেয়ারপারসন হোসেন জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন মাস্টারকার্ড
ফাউন্ডেশনের সিইও রিতা রায়, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জেনারেল এডুকেশন অনুষদের ডিন ড.
সামিয়া হক, হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের সিনিয়র লেকচারার ড.
রিচার্ড ক্যাশ, ডিপার্টমেন্ট অফ ইংলিশ অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ এর ভিজিটিং প্রফেসর ড.
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
বক্তারা
বলেন, স্যার ফজলে হাসান আবেদ দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের অধিকার ও জীবন সংগ্রামে
সবসময় নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। শিক্ষার মাধ্যমে সমাজে গুণগত পরিবর্তন আনতে বদ্ধপরিকর
ছিলেন তিনি।
দেশ-জাতি
ও বিশ্ব মানবতার প্রতি ফজলে হাসান আবেদের অবদান তুলে ধরে মেয়ে তামারা আবেদ বলেন, “শিক্ষা
বিস্তারকে সবসময় প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন তিনি। তিনি বিশ্বাস করতেন একমাত্র শিক্ষার
মাধ্যমই সমাজ থেকে দারিদ্র্য, অসমতা, বৈষম্য ও অহিষ্ণুতা দূর করা সম্ভব।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বের বিকাশ, তরুণ প্রজন্মকে সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে
তুলে সমাজের সার্বিক উন্নয়ন করতেই তিনি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি গড়ে তোলেন।”
এর
আগে অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি গড়ে তোলার পেছনে ফজলে হাসান আবেদের স্বপ্ন,
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে স্মরণসভায় একটি ভিডিওবার্তা দেখানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির
কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অ্যালামনাই মিলে সমবেত কণ্ঠে স্যার ফজলের পছন্দের দুটি
রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
স্যার
ফজলে হাসানের স্থিরচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে শুরু হয় স্মরণসভা। এরপর তার
জীবন-দর্শন নিয়ে চিত্রকলা ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা
হয়।
ভিডিওবার্তায়
স্যার ফজল হাসান আবেদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তার বন্ধু, দীর্ঘদিনের সহকর্মীসহ
একজন করে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী।
গত
বছরের ২০ ডিসেম্বর মারা যান ফজলে হাসান আবেদ। ১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল হবিগঞ্জ জেলার
বানিয়াচংয়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।