বিজয়ের
মাস উপলক্ষে গত শনিবার বিকালে
শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের সম্মেলন কেন্দ্রে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
যেখানে
সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলী আজাদ) অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে শরীফপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির তাজুল ইসলামের হাতেও ফুল তুলে দেন।
ওই
ঘটনা নিয়ে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে প্রতিবেদনও
প্রকাশ করে।
এ
নিয়ে বিব্রত সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শরীফপুরে ইউনিয়ন জামায়াতের আমির তাজুল ইসলামকে চিনি না। আমি এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাবার পর আমাকে ওই
অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয়।
“প্রতিপক্ষরা
কৌশলে আমাকে দিয়ে ফুল দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। আমি জানলে নিশ্চয় কোনো জামায়াত নেতাকে ফুল দিতাম না।”
এ
বিষয়ে প্রশ্ন করলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের শরীফপুর ইউনিয়নের কমান্ডার ফয়েজ আহমেদ ফুল মিয়া বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে’
তালিকায় জামায়াত নেতা তাজুল ইসলামের নাম আছে। তবে তাকে আলাদা করে দাওয়াত দেওয়া হয়নি।
“আমরা
মাইকিং করে মুক্তিযোদ্ধাদের দাওয়াত করেছি। এই দাওয়াত পেয়ে
তিনি চলে এসেছেন। যেহেতু চলে এসেছেন, তাই তাকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।”
তাজুল
ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতের রাজনীতি করছেন এবং নাশকতার মামলায় জেলও খেটেছেন বলে জানান ফুল মিয়া।
এ
ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ৭৪ জনের নাম
রয়েছে। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৪৩ জন। অনুষ্ঠানে
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তাদের ক্রেস্ট এবং ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের
সভাপতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ অনুষ্ঠানের আয়োজক
মুক্তিযোদ্ধারাই। আমাকে সভাপতিত্ব করতে অনুরোধ করায় আমি সভাপতিত্ব করেছি।
“যতটুকু
জানি তাজুল ইসলামকে অনুষ্ঠানে দাওয়াত করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার বিষয়ে এলাকায় মাইকিং শুনে যোগ দিয়েছিলেন।”
অনুষ্ঠানে
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী মো. বিল্লাল ভূঁইয়া, ইউপি সদস্য মো. ইকবাল হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোজ্জামেল হক তপন, ইউনিয়ন
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক রায় ভৌমিক, আশুগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. সাজিদুল ইসলাম সাচ্চু মাস্টারসহ আরও অনেকে।
এ
বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার
বলেন, “মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় জামায়াত নেতা তাজুলের নাম আছে, সেটা সত্য, কিন্তু তিনি যে স্থানীয় জামায়াতের
আমির এটাও সত্য।
“একজন
জামায়াত নেতাকে ওই অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা
দেওয়ার বিষয়টি গর্হিত কাজ। এর সাথে দলীয়
কোনো নেতা-কর্মী যুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”