খাবারের ধরন, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি
ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের আবেগ অনুভূতির কারণে মানুষের অনেক
সময় ক্ষুধা না লাগলেও খাবারের চাহিদা বাড়ে। ফলে দেহে অপ্রয়োজনীয় ক্যালরি জমে ও ওজন
বৃদ্ধি পায়।
স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত
প্রতিবেদন অবলম্বনে খাবারের চাহিদা বৃদ্ধির কয়েকটি মানসিক অবস্থা সম্পর্কে জানানো হল।
একঘেয়েমি বা বিরক্ত বোধ: একঘেয়েমি বা অলস দিনে মানুষের সময় কাটে টেলিভিশন দেখে। এই সময়ে
মজাদার কোনো খাবার মনকে প্রফুল্ল করে দেয়। আর মজাদার খাবার মানেই যে অস্বাস্থ্যকর খাবার
এই নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। তাই একঘেয়ে সময়ে কিংবা বিরক্ত বোধ করলে মানুষ এই ধরনের চটকদার
খাবার বেশি গ্রহণ করে ও স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়।
মানসিক চাপ:
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হালকা নাস্তা বিশেষত মিষ্টি-জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা
বেশ পরিচিত। দৈনন্দিন জীবনে পারিবারিক ও মানসিক চাপ মানুষের মিষ্টি খাবারের প্রবণতা
বাড়িয়ে দেয়। ফলে বাড়তি ক্যালরি যোগ হয়। এর জন্য মূলত কর্টিসোল হরমোন দায়ী।
শর্করা ও চর্বি বহুল খাবার খাওয়া মস্তিষ্কের
চাপ কমায়। তাই এই ধরনের খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। এছাড়াও, ‘স্ট্রেস হরমোন’ অব্যবহৃত
ফ্যাটি অ্যাসিড পেটের অংশে জমাট বাঁধায় হলে দেহ স্থূল হয়ে যায়।
একাকিত্ব: আমরা
নিজেকে যে কোন ঝামেলা বা খারাপ বিষয় থেকে বিরত রাখতে অন্য কিছুর সাহায্য নিতে পছন্দ
করি। খাবার এমন একটা জিনিস যা মানুষের মনকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও অন্য সব চিন্তা থেকে
বিরত রাখতে ভূমিকা রাখে।
‘হরমোন অ্যান্ড বিহেইভিয়ার’ জার্নালে
প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে জানা যায় যে, যারা একাকিত্বের সমস্যায় ভোগেন তাদের ক্ষুধা
বৃদ্ধির হরমোন ‘ঘ্রেলিন’য়ের মাত্রা বাড়ায়। ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় তাদের ক্ষুধা দ্রুত
অনুভূত হয়।
সুখ: আনন্দ
ও খাবার একে অপরের সঙ্গে জড়িত। যে কোনো সুসংবাদ পাওয়ার পরে মজাদার খাবারের আয়োজন করা
হয়। এটা অনেকটা নিজেকে উপহার দেওয়ার মতো। এই প্রক্রিয়ায় চলতে গিয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার
গ্রহণের সম্ভাবনা বাড়ে।
হতাশা: হতাশাও
মানুষের আবেগের একটি রূপ। সম্পর্ক, কর্মক্ষেত্র বা অন্য যে কোনো বিষয়েই হতাশার সৃষ্টি
হতে পারে। ফলে খাবারের দিকে ঝোঁক বেড়ে যায়। খাওয়া কিছুক্ষণের জন্য হলেও বাস্তবতা থেকে
দূরে সরিয়ে রাখতে সহায়তা করে। হতাশা কাটিয়ে উঠতে না পারলে বা সমস্যাকে জয় করার মতো
সাহস না থাকলে খাবারের প্রতি এই ঝোঁক নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন