শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এবং আখচাষি কল্যাণ সমিতির ডাকা হরতালের সমর্থন জানিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রাখেন।
বুধবার ভোর ৬টা থেকে হরতাল কর্মসূচি পালিত হয় বলে শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলু আমিন জানান।
সকাল থেকে চিনিকল শ্রমিকেরা ও স্থানীয় আখচাষি শ্যামপুর চিনিকলের সম্মুখ ফটকে অবস্থান নেন। সেখানে তারা আখ মাড়াই কার্যক্রম চালুসহ বন্ধ ৬ চিনিকল খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন এর আগে সকাল থেকে চিনিকল এলাকায় খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করেন শ্রমিক ও চাষিরা।
দাবি আদায় না হলে রেলপথ, রাজপথ অবরাধসহ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনরত সংগঠনের নেতারা।
এদিকে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে চিনিকল এলাকায়। পুলিশি বাধার মুখে আন্দোলনরত শ্রমিক ও চাষিরা চিনিকল এলাকার বাইরের সড়কে যেতে পারেন নি।
চিনিকলের পাশে রেলওয়ে স্টেশনবাজার শ্যামপুর হাট এবং শ্যামপুর বন্দর এলাকায় কোনো দোকানপাট খোলেনি। খাবারের দোকান, কাঁচাবাজার এবং ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। শ্রমিক-কর্মকর্তা আখচাষিদের আহ্বানে এ হরতালে যোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী দোকানিরাও।
শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলু আমীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৫টি চিনিকলের মধ্যে নয়টি চালু করলেও এখনও ছয়টি বন্ধ রয়েছে। তারমধ্যে শ্যামপুর চিনিকল একটি। অবিলম্বে এই চিনিকল চালু করে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ পাঁচ দফা দাবি মেনে নিতে হবে। না হলে ২৪ ডিসেম্বর থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।”
এদিকে শ্যামপুর চিনিকল আখচাষি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান সাগর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই চিনিকলের কারণে আট থেকে দশ হাজার আখচাষি অর্থকারী ফসল আখচাষ করে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়েছেন। এর সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী, রিকশাওয়ালা, নৈশপ্রহরীসহ অনেকে রয়েছে। যারা এই চিনিকলের উপর নির্ভর করে জীবন-জীবিকা পরিচালনা করে আসছেন।
এর আগে গত ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর চিনিকল খুলে দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ও সমাবেশ করেছে তারা।
এদিকে আন্দোলনরত শ্রমিক ও চাষিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এনিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ ব্যাপারে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মধু সুধন রায় বলেন, বিশৃঙ্খলা এড়াতেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মিছিল নিয়ে চিনিকল ক্যাম্পাসের বাইরে গেলে বিশৃঙ্খলা হতে পারে, তাই তাদের মিছিলটিকে ঘুরিয়ে চিনিকল ক্যাম্পাসে পাঠানো হয়েছে।
গত ১ ডিসেম্বর দেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ছয়টি চিনিকলের মাড়াই বন্ধ রেখে ৯টি চিনিকলের মাড়াই চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন। লোকসান কমানোর উদ্দেশে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার।