সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র উদ্বোধন
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, আজ আমি গর্ববোধ করছি এজন্য যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনারা একসঙ্গে এ এলাকায় প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক শুধু ঐতিহাসিক ও সংস্কৃতিগত নয়, এটি রক্তের সম্পর্ক। আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানাই সীতাকুণ্ড উপজেলার শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও আত্মোৎসর্গকারী ভারতীয় সেনাদের। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন পাইলট হিসেবে। তাই আমি খুবই গর্বিত। গতকাল মঙ্গলবার মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে এসে জীবন উত্সর্গকারী অর্ধশতাধিক ভারতীয় সৈনিকের আত্মত্যাগের স্মৃতিরক্ষায় সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে নির্মিত ভাস্কর্য ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য দিদারুল আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন, মহানগর কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, ভারতীয় হাইকমিশনারের সহধর্মিণী সংগীতা দোরাইস্বামী, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি দীপ্তি আলংঘাট।
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চিরঞ্জীব হবে উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রেরণা। বাংলাদেশের জন্য তার আত্মত্যাগ এদেশের জনগণ ভুলতে পারবে না।
সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী গতকাল চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাত্ করেন। এ সময় তারা চট্টগ্রামের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের অবদান থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন। তিনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন আঞ্চলিক বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার ও উভয় দেশের জনগণের আস্থা অর্জনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফে মতবিনিময়
এদিকে ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, ভারতের হাইকমিশনার শ্রী বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, ভারত বাংলাদেশ দুই দেশ ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের মতোই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ভারতের সাব্রুমে ফেনী নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখানে স্থলবন্দর চালু হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের আরো প্রসার ঘটবে। তিনি সোমবার সন্ধ্যায় মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহজাদা সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভাণ্ডারীর সভাপতিত্বে দরবার শরিফের হলরুমে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ফটিকছড়ির চার বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মো. আবু তৈয়ব, ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী, পলিটিক্যাল অ্যাটাসে দীপ্তি আলংঘাট, উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা মো.সায়েদুল আরেফিন, হাটহাজারী সার্কেলের অ্যাডিশনাল এসপি আব্দুল্লাহ্ আল মাসুম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ইত্তেফাক/এসি