চিড়িখানার কোয়ারেন্টিন সেন্টারের একটি জায়গায় রেখে ছোট শিশুদের মতোই ফিডারে দুধ খাওয়ানো হচ্ছে বাঘ ছানাটিকে। ছোট ছোট বল আর কাপড়ের তৈরি একটি খেলনা বাঘের সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটছে তার।
এভাবে বাঘছানাকে হাতে ধরে দুধ খাওয়াচ্ছেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার চিকিৎসক।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ও চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ১৪ নভেম্বর রাতে ‘জয়া’ নামের একটি বাঘিনী তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। তবে শাবকগুলোকে মা দুধ খেতে না দেওয়ায় পরদিন একটি এবং ১৮ নভেম্বর আরও একটি শাবক মারা যায়।
বাঘছানাটির পরিচর্যায়ও কোনো কমতি থাকছে না।
জীবিত এই শাবকটিকে মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে আলাদা করে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে। সেখানে একাই থাকছে বাঘ ছানা। হাতে ধরে খাওয়ানো হচ্ছে দুধ।
চিকিৎসক শুভ বলেন, শুরুতে আলাদা রেখে যখন তাকে দুধ খাওয়ানো হয়েছিল তখন তার হজমের সমস্যা হয়েছে। সাথে রক্ত পায়খানা হয়েছিল এবং তার যেভাবে ওজন বাড়ার কথা ছিল তা না হয়ে উল্টো ওজন কমতে শুরু হয়েছিল। এ সময় ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বাঘের ছানাটিকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় গত ১৪ নভেম্বর রাতে ‘জয়া’ নামের একটি বাঘিনীর জন্ম দেওয়া তিনটি শাবকের একটি এটি। জন্মের পর মা দুধ না দেওয়ায় অপর শাবক দুটি মারা যায়। জীবিত এই শাবকটিকে চিড়িয়াখানার কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রেখে লালনপালন করা হচ্ছে, ছোট ছোট বল আর কাপড়ের তৈরি একটি খেলনা বাঘের সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটছে তার। ছবি: সুমন বাবু
তিনি জানান, শুরুতে বাঘের শাবকটিকে বাজারে পাওয়া বিড়ালের দুধ খাওয়ানো হয়েছিল। এখন ছাগলের দুধের সাথে অন্যান্য কিছু উপকরণ মিশিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। বাঘের ছানাটি আগের চেয়েও ভালো অবস্থায় আছে।
তার ওজন হয়েছে দুই কেজি ৩০০ গ্রাম।
“নিজে নিজে দৌঁড়াতে পারছে, আগের চেয়ে সে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছে। তিন মাস পর্যন্ত সে এ অবস্থায় থাকলে তাকে খাঁচায় দেওয়া হবে।”
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় গত ১৪ নভেম্বর রাতে ‘জয়া’ নামের একটি বাঘিনীর জন্ম দেওয়া তিনটি শাবকের একটি এটি। জন্মের পর মা দুধ না দেওয়ায় অপর শাবক দুটি মারা যায়। জীবিত এই শাবকটিকে চিড়িয়াখানার কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রেখে লালনপালন করা হচ্ছে, ছোট ছোট বল আর কাপড়ের তৈরি একটি খেলনা বাঘের সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটছে তার। ছবি: সুমন বাবু
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় যে বাঘিনী শাবকগুলোর জন্ম দিয়েছে সেটার জন্মও এই চিড়িয়াখানায়। বর্তমানে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দুটি বাঘ ও চারটি বাঘিনী রয়েছে।
২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর ৩৩ লাখ টাকায় কেনা ১১ মাস বয়সী রাজ এবং ৯ মাস বয়সী পরীকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়।
২০১৮ সালের ১৯ জুলাই বেঙ্গল টাইগার দম্পতি রাজ-পরীর তিনটি ছানার জন্ম হয়। যার মধ্যে দু্টি ছিল ‘হোয়াইট টাইগার’, অন্যটি কমলা-কালো ডোরাকাটা।
পরদিন একটি সাদা বাঘ শাবক মারা যায়। অন্য সাদা বাঘিনীটি ‘শুভ্রা’। কমলা-কালো বাঘিনীটির নাম দেওয়া হয় ‘জয়া’। এই জয়া গত ১৪ নভেম্বর তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। যার মধ্যে দুটি মারা যায়।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় গত ১৪ নভেম্বর রাতে ‘জয়া’ নামের একটি বাঘিনীর জন্ম দেওয়া তিনটি শাবকের একটি এটি। জন্মের পর মা দুধ না দেওয়ায় অপর শাবক দুটি মারা যায়। জীবিত এই শাবকটিকে চিড়িয়াখানার কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রেখে লালনপালন করা হচ্ছে, ছোট ছোট বল আর কাপড়ের তৈরি একটি খেলনা বাঘের সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটছে তার। ছবি: সুমন বাবু
অল্প কিছু দিনের মধ্যে শুভ্রারও সন্তান জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান চিকিৎসক শুভ।
এর আগে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর বাঘিনী পরী দুটি শাবকের জন্ম দেয়। এরমধ্যে পরদিনই একটির মৃত্যু হয়।বেঁচে থাকা শাবকটি শুরুর দিকে ইনকিউবেটরে এবং পরে তিন মাস পর্দায় ঢাকা খাচায় নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়।
সুস্থ হয়ে ওঠার পর খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া ওই বাঘ ছানার নাম রাখা হয় করোনা।