তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুৎ সাবুসোলু বুধবার গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাত
করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার পরে বৈঠকের বিভিন্নি দিক
সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী জোরপূর্বক বিতাড়িত
হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতে
তুরস্ককে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।”
২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত
লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ
রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭
সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গাদের ফেরার পরিবেশ তৈরি করে, সেজন্য চাপ সৃষ্টি করতে
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। তুরস্কও রোহিঙ্গা সঙ্কটে
বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিভিন্ন সময়ে।
উপ-প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে তুরস্ককে
আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের বিশাল আঞ্চলিক বাজার এবং অভ্যন্তরীণ
বাজারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কেন্দ্রে
অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের বিশাল মার্কেট রয়েছে। এখানে বিনিয়োগ করলে উভয়ই লাভবান হবে।”
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে তুরস্কের আগ্রহের কথা জানিয়ে
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘মূল্য
দেয়’। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য যা কিছু করার তার দেশ সেটা
করবে।
জ্বালানি থেকে পর্যটন- সকল খাতেই তুরস্ক বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে বলে জানান
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দরের ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ
নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিজয়’ মেরামত করে দেওয়ায় তুরস্ককে ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণের
কথাও পুর্নব্যক্ত করেন হাসিনা।
সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন,
করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির উন্নতি হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তীর মাস
মার্চে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সফরে আসতে পারেন।
হাসান জাহিদ তুষার বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সঙ্গে মহামারী মোকাবেলায়
শেখ হাসিনার সরকারের নেওয়া পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন তিনি।
অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশে তুরস্কের
রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান বৈঠকের সময় উপস্থিত ছিলেন।