‘হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বুধবার
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ২১টি জেলার রেকর্ড রুমের নাগরিক সার্ভিস ই-সার্ভিস
বা ডিজিটাল সার্ভিসে রূপান্তরের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান
চৌধুরী।
ঢাকা, ফরিদপুর, নরসিংদী, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, শরীয়তপুর,
কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার,
হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও সিরাজগঞ্জ- এই জেলাগুলোর
সিএস, এসএ, আরএস ও দিয়ারা জরিপের ১ কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৪টি খতিয়ান ডিজিটাল রেকর্ডরুমে
পাওয়া যাবে।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, “জমির খতিয়ান সংগ্রহে হয়রানি কমাবে ডিজিটাল
রেকর্ড রুম। খতিয়ান সংগ্রহে মানুষের জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে যাতায়াত কমে যাবে। এছাড়া
দালালদের উৎপাত আর থাকবে না।”
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মৌজার হিসেবে বিভিন্ন জরিপের
অন্তর্গত মোট ৯৭ হাজার ৪৪৫টি মৌজার খতিয়ান প্রকাশ করা হয়েছে।
অনলাইনে খতিয়ানের জন্য আবেদন করে শুধু সার্টিফাইড কপি প্রয়োজন
হলে তা সংগ্রহ করতে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে আসতে হবে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মহাফেজখানা তথা রেকর্ড রুম শাখার
মাধ্যমে সিএস/আরএস/এসএ/বিআরএস খতিয়ানের জাবেদা নকল আবেদন গ্রহণ ও সরবরাহ, কেস নথি ও
মিস কেইস ইত্যাদির নকল প্রদান, যে সকল খতিয়ানের নকল প্রদান করা যাবে না, সে ক্ষেত্রে
তথ্য প্রদান ও মৌজা ম্যাপ সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
প্রাথমিক পর্যায়ে ৬১ জেলায় জেলা তথ্য সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে
রেকর্ডরুমের সেবা প্রদান কর হত। রেকর্ড নাগরিকের জন্য খুবই একটি স্পর্শকাতর একটি ডকুমেন্ট
হওয়ায় এই সব তথ্যকে নাগরিকের জন্য আরও বেশি কার্যকর করার জন্য ডিজিটাল রেকর্ড রুমের
কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
www.eporcha.gov.bd, www.land.gov.bd,
www.dlrs.gov.bd, www.minland.gov.bd সাইট হতে নাগরিক অনলাইনে এই সেবাটি গ্রহণ করতে
পারবেন।
৬১টি জেলার সিএস, এসএ, আরএস ও দিয়ারা জরিপের মোট ৩ কোটি
৯৮ লাখ ৫৮ হাজার ১১৩টি খতিয়ান অনলাইনে পাওয়া যাবে।
২১ জেলার পর পর্যায়ক্রমে (তিন পার্বত্য জেলা ব্যতীত) বাকি
৪০টি জেলার রেকর্ডরুমকে ডিজিটাল রেকর্ড রুম হিসেবে চালু করা হবে।
এটুআই-এর সহযোগিতায় ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ডিজিটাল
রেকর্ডরুম স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন করেছে।
মন্ত্রী সাইফুজ্জামান বলেন, “অনলাইনে খতিয়ান প্রাপ্তির
সাথে সাথে যেন অনলাইনে খতিয়ানের অটোমেটেড সার্টিফাইড কপিও পাওয়া যায়, সে বিষয়েও আমরা
কাজ করছি।”
আগামী বছরের মধ্যেই সারাদেশে ডিজিটাল রেকর্ডরুমের কার্যক্রম
শেষ করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এসময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মাক্ছুদুর রহমান
পাটওয়ারী উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন খতিয়ান প্রদান ও ডিজিটাল রেকর্ড রুম তৈরির উদ্যোগ
গ্রহণ করার জন্য এ বছর ভূমি মন্ত্রণালয়ের দল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার-২০২০’ পুরষ্কার
পেয়েছে।
এর আগে ডিজিটাল রেকর্ড রুম সংক্রান্ত কারিগরি ও অগ্রগতির
উপর একটি সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং
সেলের প্রধান মো. দৌলতুজ্জামান খাঁন।
অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থেকে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য
দেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তসলীমুল ইসলাম ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার
মোস্তাফিজুর রহমান এবং জুম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেন এটুআই এর প্রকল্প
পরিচালক আব্দুল মান্নান, রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।
ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান উম্মুল হাছনা, ভূমি
সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী পাটোয়ারীসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন।