বৃহস্পতিবার দুপুরে সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক
বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
করোনাভাইরাস আরও প্রাণঘাতি রূপ নিয়ে
ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “ইউরোপ-আমেরিকার অবস্থা
ভয়াবহ। এই অবস্থায় নিজের এবং অন্যের সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরিধান, স্বাস্থ্যবিধি
মেনে চলার বিকল্প নেই। টিকা সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় নয় বলে অনেক জনস্বাস্থ্য
বিশেষজ্ঞ মনে করছেন।
“প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারের অংশ হিসেবে
মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করাই বিকল্প ভ্যাকসিন। তাই কোনো রূপ অবহেলা নয়। আতঙ্কিত না হয়ে
মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে সকলকে।”
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায়
সরকার প্রস্তুতি নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে প্রণোদনা
কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আতঙ্কিত না হয়ে
স্বাস্থ্যবিধির প্রতি মনোযোগী হতে হবে।
“লন্ডনসহ বিভিন্ন দেশের ফ্লাইটের বিষয়ে
সরকার সজাগ রয়েছে। লন্ডন-ঢাকা ফ্লাইটের বিষয়ে পরিস্থিতি ক্লোজলি মনিটরিং করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার সরকার অতীতের ধারাবাহিকতায় সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।”
বিএনপি মহাসচিব চিরাচরিত শব্দ চয়নে সরকারের
বিরুদ্ধে আবারও বিষোদগার করছেন অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “একে সমালোচনা না বলে
প্রতিহিংসা ও মিথ্যাচার বলা যায়। বিএনপির দাবি, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে সরকার নাকি
একেবারেই ভ্রুক্ষেপহীন। ফখরুল সাহেবরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে রাজনৈতিক আইসোলেশনে আছেন বলেই
সরকারের কোনো উন্নয়ন দেখতে পায় না।
“বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন মহামারী নিয়ন্ত্রণে
হিমশিম খাচ্ছে, তখন শেখ হাসিনার মানবিক ও সাহসী নেতৃত্বে একদিকে সংক্রমণ রোধ ও চিকিৎসা,
অপরদিকে জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা বিধানে গৃহীত পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপীও প্রশংসিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আসলে বিএনপি চেয়েছিল
মানুষ না খেয়ে এবং বিনা চিকিৎসায় রাস্তায় মরে পড়ে থাকবে। কিন্তু স্রষ্টার রহমত এবং
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা হয়নি বলেই তাদের এত গাত্রদাহ। জনগণের ক্ষতি করার পাশাপাশি
দেশের ইমেজ নষ্ট করা ও মিথ্যাচারই এখন বিএনপির একমাত্র কৌশল। তারা গণমাধ্যমে ব্রিফিং
আর বিবৃতি ছাড়া করোনাকালে জনগণের জন্য কি করেছে?”
বিএনপি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিয়ে
জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “তারা পরপর
পাঁচবার দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করা ছাড়া আর কি দিতে পেরেছে? ২০০৬-০৭ অর্থবছরে দেশের বাজেট ছিল ৫৪ হাজার ৮০০
কোটি টাকা আর সেই বাজেট বর্তমানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত
হয়েছে। ২০০৬ সালের মূল এডিপি ছিল প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা, আর এখন ২ লাখ ৫ হাজার কোটি
টাকা। শুধু তাই নয়, তখনকার সময় রিজার্ভ ছিল ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বর্তমানে ৪২ বিলিয়ন
মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।
“অর্থনীতি এগিয়ে যাওয়া নিয়ে যখন বিশ্বব্যপী
প্রসংশা চলছে, তখন বিএনপি প্রকাশ করেছে সংশয়। তারা বলে সরকার নাকি নিজেরাই ‘রোল মডেল’
বলছে। বিএনপির এসব বানানো গল্প। বিএনপি এখন কূলহারা নৌকার মাঝি আর পথহারা পথিকের মতো।
তারা সরকারের অর্জনে চরম পরশ্রীকাতর। এটি তাদের নেতিবাচক রাজনীতির অনিবার্য ফসল।”
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনে বিএনপির
কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটা ভালো খবর। কিন্তু কর্মসূচি পালনের চেয়ে
বেশি প্রয়োজন স্বাধীনতাবিরোধী এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে গোপন ও ওপেন সখ্য
থেকে বেরিয়ে আসা। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নয়, তাদের নিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী
পালন এক ধরনের প্রহসন।”